কাত্যায়নী ব্রতারম্ভ
কাত্যায়নী দেবীর বাস্তব পরিচয় কি?
কাত্যায়নী দেবী বাস্তবে কৃষ্ণলীলার সহায়ক অঘটন ঘটন পটিয়সি যোগমায়াদেবী। তিনি গোকুলে কৃষ্ণলীলার সহায়ক প্রেমসর্ব্বস্ব গোকুলেশ্বরী। তিনি ছায়া স্বরূপে এই জড়জগতে কৃষ্ণবহির্মুখ জীবকূল কে মোহিত করে অখিল ব্রহ্মাণ্ডের অধিশ্বরী রূপে বা অখিলেশ্বরী রূপে ব্যাতিরেক ভাবে কৃষ্ণদাস্য করেথাকেন।
ব্যাতিরেক ভাবে কৃষ্ণদাস্য করেথাকেন।
একেয়ং প্রেমসর্ব্বস্ব স্বভাবা গোকুলেশ্বরী।
অস্যা আবরিকাশক্তির্মহামায়াখিলেশ্বরী।
যয়া মুগ্ধং জগৎ সর্ব্বং সর্ব্বে দেহাভিমানিনঃ।
( ভাগবতম, ১০।২২।৪ বিশ্বনাথ টিকা)
বৃন্দাবন একটি মহাপীঠ। সেখানে কৃষ্ণলীলার সহায়ক অঘটন ঘটন পটিয়সি মায়াদেবী যোগমায়া বা ক্যাতায়নী রূপে বিরাজিতা। তিনি ভক্তদের কৃষ্ণ ভক্তি প্রদান করেন। ভক্তি হল কৃপা সাপেক্ষ দুষ্প্রাপ্য বস্তু। সাধনার দ্বারা এই ভক্তি লাভ হয়না। কেবল সেই অঘটন ঘটন পটিয়সি যোগমায়া বা ক্যাতায়নী দেবীর কৃপাতেই লাভ হয়।
কাত্যায়নী ব্রত কি, কেন ?
শ্রীকৃষ্ণকে প্রাণবল্লভ রূপে পাবার জন্য বৃন্দাবনের গোপীরা আদ্যাশক্তি মা কাত্যায়নির পূজা করেছিলেন। ক্যাতায়নি মা দুর্গারই আরেকনাম। কাত্যায়নিকে ভাগবতে ভদ্রকালী বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
এবং মাসং ব্রতং চেরুঃ কুমার্যঃ কৃষ্ণচেতসঃ।
ভদ্রকালীং সমানর্চুর্ভূয়ান্নন্দসুতঃ পতিঃ।।
( ভাগবতম, ১০।২২।৫ )
কার্ত্তিক মাস ব্যাপী এই ব্রত পালন করেছেন বৃন্দাবনের গোপীরা। গোপীদের প্রার্থনা মন্ত্রটি ছিল এইরূপ—
ক্যাতায়নি মহামায়ে মহাযোগিন্যধীশ্বরি।
নন্দগোপ সূতং দেবি পতি মে কুরু তে নমঃ।
ইতি মন্ত্রং জপন্ত্যস্তাঃ পূজাং চক্রুঃ কুমারিকাঃ।।
( ভাগবতম, ১০।২২।৪ )
ব্রজগোপীরা কিভাবে এই ব্রত করেছিলেন ?
গোপীরা কালিন্দী নদীতে সূর্যোদয়ের পূর্বে উঠে স্নান করে মায়ের প্রতিমা তৈরি করে গন্ধমাল্য, ধূপ, দীপ, ফুল, তন্ডুল সহ নানা সুগন্ধি বস্তু সহকারে পূজা করেছেন।
এভাবে মাসব্যাপী দেবীর আরাধনার ফলে মা ক্যাতায়নী তুষ্ট হয়ে গোপীদের বর প্রদান করেন এবং বলেন—আগামী পূর্ণিমায় তোমাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ হবে। সেই পূর্ণিমাই বিখ্যাত রাসপূর্ণিমা নামে পরিচিত।