Disappearance Day of Srila Murari Gupta Thakur

ভবরোগ-বৈদ্য শ্রীমুরারি-নাম যাঁর।
‘শ্রীহট্টে’ এ-সব বৈয়াবের অবতার ।।
—(চৈঃ ভাঃ আদি ২।৩৫ )
 
শ্রীবাস পণ্ডিত, শ্রীচন্দ্রশেখর আচার্য্য ও শ্রীমুরারি গুপ্ত ঠাকুর—শ্রীহট্টে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রীহট্ট বর্তমান বাংলা দেশের একটি জেলা। শ্রীমুরারি গুপ্ত ঠাকুৰ বৈদ্য কুলে আবির্ভূত হন। শ্রীহট্ট থেকে এসে তিনি নবদ্বীপে মায়াপুরে শ্রীজগন্নাথ মিশ্রের গৃহ সন্নিধানে বাস করতেন। এঁর পিতামাতার নাম অজ্ঞাত। মহাপ্রভু অপেক্ষা তিনি বয়সে বড় ছিলেন।
 
শ্রীমুরারি গুপ্ত, শ্রীকমলাকান্ত, শ্রীকৃষ্ণানন্দ প্রভৃতি মহাপ্রভুর সঙ্গে অধ্যয়ন করতেন। ন্যায়ের ফাঁকিতে শ্রীগৌরসুন্দর সকলকে পরাস্ত করতেন। ব্যাকরণের ও ন্যায়ের ফাঁকি প্রভৃতি নিয়ে তিনি পড়ুয়াদের সঙ্গে খুব তত বিতর্ক করতেন, কেহ তাঁর সঙ্গে পেরে উঠতেন না। শেষ পর্য্যন্ত মারা-মারি, কাদা ছোড়া-ছুড়ি, ধাক্কা-ধাক্কি প্রভৃতি হ’ত। গঙ্গার ঘাটে এত হুড়াহুড়ি হত যে সমস্ত জল বালু-কাদাময় হয়ে যেত, মহিলারা জল নিতে পারতেন না। ব্রাহ্মণেরা স্নান করতে পারতেন না। এ ভাবে গঙ্গার ঘাটে শ্রীগৌরসুন্দর জলকেলি করে বেড়াতেন।
 
তবে হয় মারামারি যে যারে পারে।
কদম ফেলিয়া কারো গায়ে কেহ মারে।।
এত হুড়াহুড়ি করে পড়ুয়া সকল ।
বালি কাদাময় হয় সব গঙ্গাজল।।
 
—(শ্রীচৈতন্য ভাগবত আদি-লীলা অষ্টম অধ্যায়)
 
কয়েক বছরের মধ্যে শ্রীগঙ্গাদাস পণ্ডিতের পাঠশালায় শ্রীগৌরসুন্দর প্রথম স্থান অধিকার করলেন। তখন তাঁর কাছে ছাত্রবৃন্দের নতি স্বীকার করতে হল। মুরারি কিন্তু পরাজয় স্বীকার করতেন না বা পাঠ সম্পন্ধে কোন আলাপ আলোচনা করতেন না। এজন্য শ্রীগৌরসুন্দরের মনে ক্রোধ হত। তিনি মুরারি গুপ্তকে ডেকে বলতেন—
 
প্রভু বোলে,—“বৈদ্য, তুমি ইহা কেনে পঢ়?
লতা-পাতা নিয়৷ গিয়া রোগী কর দড়।।
ব্যাকরণ-শাস্ত্র এই বিষমের অবধি।
কফ-পিত্ত, অজীর্ণ-ব্যবস্থা নাহি ইথি।।
—(চৈঃ ভাঃ আদি ১০।২১-২২)
 
এ সব কথা শুনে মুরারি যদিও মনে মনে রুষ্ট হতেন বাহিরে রোষ প্রকাশ করতেন না। শুধু মহাপ্রভুর দিকে শান্তভাবে তাকিয়ে থাকতেন। প্রভুর দিব্য প্রশান্ত-মূর্ত্তি দর্শনে ও তাঁর সুকোমল করতল স্পর্শে কারও কিছু বলবার থাকত না; সকলে শান্ত হত।
 
তখন শ্রীগৌরসুন্দর ব্যাকরণ শাস্ত্রের আলোচনা মাত্র আরম্ভ করেছেন। মুরারি গুপ্ত তাঁর সঙ্গে, অলঙ্কার শাস্ত্রের বিচার আরম্ভ করতেন; কিন্তু তাঁকে পরাস্ত করতে পারতেন না। আশ্চর্য হয়ে মনে মনে বলতেন—এমন পাণ্ডিত্য কোন সাধারণ মানুষের থাকতে পারে না। তিনি নিশ্চয়ই কোন মহাপুরুষ হবেন। নবদ্বীপের কোন ছাত্র তাঁর সঙ্গে তর্কে পেরে উঠতেন না। মুরারি বৈদ্যের সঙ্গে মাঝে মাঝে এরূপ তর্ক বিতর্ক হত, আবার মিত্রভাবে দুজন গঙ্গা স্নানে যেতেন।
 
মহাপ্রভু গয়াধাম থেকে এসে যখন প্রেম প্রকাশ করতে লাগলেন, মুরারি গুপ্ত প্রভুর পরম ভক্ত হলেন। শুক্লাম্বর পণ্ডিতের গৃহে মহাপ্রভুকে দিব্যভাবে ক্রন্দন করতে দেখে মুরারি গুপ্ত আশ্চর্য হয়ে গেলেন।
 
শ্রীমুরারি গুপ্ত শ্রীরাম-সীতার উপাসনা করতেন। একদিন মহাপ্রভু হঠাৎ তাঁর গৃহে উপস্থিত হয়ে বরাহভাবে গর্জন করতে করতে একটি জলপাত্র দন্তে ধারণ করে উঠালেন ! অবাক মুরারি গুপ্ত দিব্য বরাহরূপী শ্রীগৌরসুন্দরকে দণ্ডবৎ করলেন। তখন শ্রীগৌরসুন্দর বললেন—”মুরারি। তুমি আমার স্তুতি কর।” মুরারি গুপ্ত স্তুতি করতে লাগলেন। স্তুতি শুনে মহাপ্রভু খুব সুখী হয়ে বললেন—“মুরারি! তোমার নিকট আমি সত্য করে বলছি, আমি সকল বেদের সার, এবং সংকীর্ত্তন প্রচার করতে ও করাতে আমি অবতীর্ণ হয়েছি, ভক্ত দ্রোহ আমি সইতে পারি না, ভক্ত-দ্রোহী যদি পুত্রও হয় তথাপি তার মস্তক ছেদন করি, তার প্রমাণ নরকাসুর।” মুরারির প্রতি প্রভু অনেক নিগূঢ় আত্মকথা বলে নিজ গৃহে এলেন।
 
অন্য একদিবস মহাপ্রভু শ্রীবাস অঙ্গনে সাত প্রহরিয়া ভাব প্রকট করে ভক্তগণকে আহ্বান করে ইষ্টবর দিতে লাগলেন, শ্রীমুরারি গুপ্তকে ডেকে বললেন—মুরারি। তুই এতদিনে জানিস না আমি কে? আমার স্বরূপ দেখ।
 
“মোর রূপ দেখ।”
মুরারি দেখয়ে রঘুনাথ পরতেক।।
দূৰ্ব্বাদলশ্যাম দেখে সেই বিশ্বম্ভর।
বীরাসনে বসিয়াছে মহাধনুর্ধর।।
জানকী-লক্ষণ দেখে বামেতে, দক্ষিণে।
চৌদিকে করয়ে স্তুতি বানরেন্দ্রগণে।।
আপন প্রকৃতি বাসে যে হেন বানর।
সকৃৎ দেখিয়া মূৰ্চ্ছা পাইল বৈদ্যবর।।
 
-(চৈঃ ভাঃ মধ্যঃ ১০ (৮-১০ )
 
মুরারি গুপ্ত তখন দেখতে পেলেন নবদুৰ্ব্বাদলশ্যাম ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ধনুর্বান হাতে রত্নাসনে বসে আছেন, বামে বিবিধ অলঙ্কারে ভূষিতা সীতা এবং দক্ষিণে ধনুর্বাণ হাতে লক্ষ্মণ শোভা পাচ্ছেন, সামনে বড় বড় বানর বীরগণ স্তুতি করছেন, মুরারি নিজেকেও সে বানরগণের মধ্যে দেখতে পেলেন। মাত্র একবার এ দিব্য রূপ দেখে মুরারি গুপ্ত মূর্চ্ছিত হয়ে পড়লেন। মহাপ্রভু তখন মুরারিকে ডেকে বললেন – মুরারি! ওঠ আমার দিব্যরূপ দেখ। তুই কি ভুলে গিয়েছিস, সীতা হরণকারী রাবণের লঙ্কা দগ্ধকারী হনুমান তুই। ওঠ, তোর জীবন-স্বরূপ লক্ষ্মণকে দর্শন কর। যার দুঃখে তুই কত কেঁদেছিলি, সে সীতাকে প্রণাম কর। মহাপ্রভুর বাক্যে মুরারি চৈতন্য লাভ করলেন এবং দিব্যরূপ দেখে বারবার তাঁকে দণ্ডবৎ করতে করতে কাঁদতে লাগলেন। মুরারির প্রতি প্রভুর কৃপা দেখে ভক্তগণ আনন্দে ‘হরি’ ‘হরি’ ধ্বনি করে উঠলেন।
 
একদিন সন্ধ্যার সময় মহাপ্রভু ও নিত্যানন্দ প্রভু শ্রীবাস অঙ্গনে বসে আছেন। এমন সময় তথায় শ্রীমুরারি গুপ্ত এলেন। প্রথমে মহাপ্রভুকে ও পরে নিত্যানন্দ প্রভুকে বন্দনা করলেন। প্রভু বললেন-মুরারি ! ব্যতিক্রম হল। মুরারি বললেন তুমি যেমন প্রেরণা দিলে তেমনি করলাম। প্রভু বললেন—ঘরে যাও সব কিছু পরে জানতে পারবে। মুরারি গুপ্ত গৃহে ফিরে ভোজনাদি করে শয়ন করলেন। তারপর স্বপ্ন দেখলেন—
 
স্বপ্নে দেখে মহাভাগবতের প্রধান।
মল্লবেশে নিত্যানন্দ চলে আগুয়ান।।
নিত্যানন্দ-শিরে দেখে মহা-নাগ-ফণা।
করে দেখে শ্রীহল, মুষল তাল বানা।।
নিত্যানন্দ মূর্তি দেখে যেন হলধর।
শিরে পাখা ধরি পাছে যায় বিশ্বস্তর।।
 
-(চৈঃ ভাঃ মধ্যঃ ১০/১৪-১৬)
 
শ্রীনিত্যানন্দপ্রভু সাক্ষাৎ হলধর-অনন্তদেব, মহাভাগবত স্বরূপ। করে হল মুষল শোভা পাচ্ছে। আগে আগে চলছেন। পিছনে আছেন শিরে ময়ূর পাখাধারী বিশ্বম্ভর। মুরারি বুঝতে পারলেন, কে বড়। প্রভু হাসতে হাসতে বললেন—মুরারি! এখন বুঝতে পারলে ত’? তুমি ব্যতিক্রম করলে কি ভাবে চলবে? মুরারি গুপ্ত স্বপ্ন-ঘোরে “নিত্যানন্দ,” “নিত্যানন্দ” বলে ক্রন্দন করে। উঠলেন। পতিব্রতা পত্নী ‘কৃষ্ণ’ ‘কৃষ্ণ’ বলে তাকে জাগালেন। মুরারি গুপ্ত বুঝতে পারলেন নিত্যানন্দ বড় মহাভাগবত। শ্রীগৌরকে তিনিই প্রকাশ করেন।। তাঁর কৃপা না হলে গৌরসুন্দরের কৃপা লাভ করা যায় না।
 
অন্য দিবস মুরারি গুপ্ত শ্রীবাস-অঙ্গনে এসে দেখলেন মহাপ্রভু দিব্য ভাবে দিব্য আসনে বসে আছেন। ভক্তগণ নিজ নিজ সেবা করছেন। শ্রীগদাধর প্রভুকে তাম্বুল দিচ্ছেন, প্রভু আনন্দে তাম্বুল চব্বণ করছেন, নরহরি চামর ব্যজন করছেন। মুরারি গুপ্ত নমস্কার করলেন, প্রভু মুরারির হাতে চব্বিত তাম্বুল দিলেন। চব্বিত তাম্বুল মুখে দিয়ে মুরারি মাথায় হাত মুছলেন। দেখে প্রভু বললেন—মুরারি ! আমার উচ্ছিষ্ট তোমার অঙ্গে লাগল। মুরারি বললেন— আজ আমার সর্ব্বঅঙ্গ পবিত্র হল। প্রসাদ অপ্রাকৃত। ভগবানের নাম ও প্রসাদ অভিন্ন, উচ্ছিষ্ট বুদ্ধি করলে অপরাধ হয়। প্রভুর চব্বিত তাম্বুল খেয়ে মুরারি কৃষ্ণ প্রেমে পাগল হয়ে গৃহে এলেন, পতিব্রতা পত্নী আসন দিয়ে তাঁকে বসালেন ও সামনে অন্নের থালা এনে দিলেন। মুরারি ভাবাবিষ্ট হয়ে সে অন্ন মুষ্টি মুষ্টি খাও খাও বলে ভূমিতে ফেলতে লাগলেন; পত্নী এসব রহস্য জানতেন।তাই তিনি বললেন স্বামিন্ ! আর দিতে হবে না, এখন আপনি ভোজন করুন। ভাবাবেশে মুরারি কিছু ভোজন করলেন তারপর শয়ন করলেন।
 
সকাল বেলা মহাপ্রভু মুরারি গুপ্তের গৃহে এসে তাকে বার বার ডাকতে লাগলেন। মুরারি ‘কৃষ্ণ’ ‘কৃষ্ণ’ বলে তাড়াতাড়ি উঠে প্রভুকে নমস্কার করে এত প্রত্যূষে আসবার কারণ জিজ্ঞাসা করলে প্রভু বললেন- মুরারি! তোর কি মনে নাই? খাও- খাও- বলে কত ঘৃত মাখা অন্ন তুই আমায় কাল রাত্রে খাইয়েছিস? তুই দিলে আমি কি না খেয়ে থাকতে পারি? বহু ঘৃত মাখা অন্ন খেয়ে অজীর্ণ হয়েছে, আমায় এর ঔষধ দে। একথা শুনে মুরারি বড় খেদ করতে লাগলেন। অতঃপর প্রভু বললেন-মুরারি! “তোর অন্নে অজীর্ণ, ঔষধ তোর জল।” (চৈঃ ভাঃ মধ্যঃ ২০।৬৯) এ বলে তথাস্থিত এক জলপূর্ণ ঘটের জল পান করতে লাগলেন। মুরারি গুপ্ত তা দেখে হাহাকার করে বললেন—প্রভো ! আমি অধম, নীচ, আমার গৃহে জল আপনার পানের যোগ্য নয়।
 
ভগবান্ ভক্তবৎসল। ভক্তের গৃহে তিনি ভোজন করেন। ভক্ত তাঁকে যেভাবে রাখেন; তিনি ঠিক সেভাবে থাকেন। যা খাওয়ান তা খান। ভক্তের রুচিই তাঁর রুচি। এভাবে প্রভু নিত্যপ্রিয় হনুমান বা গরুড়ের অবতার শ্রীমুরারি গুপ্তকে নিয়ে কত লীলা করতে লাগলেন।
 
একদিন শ্রীমুরারি গুপ্ত চিন্তা করলেন– প্রভুর অগ্রে যদি দেহত্যাগ করতে পারি ভাল হয়। এভাবে আত্মহত্যা করবার জন্য তিনি একখানা ছোৱা তৈরী করলেন এবং তা ঘরে লুকিয়ে রাখলেন। অন্তর্যামী প্রভু সব জানতে *পেরে তাড়াতাড়ি তাঁর ঘরে গিয়ে বলতে লাগলেন- মুরারি ! আমার যত বিলাস সব তোমায় নিয়ে;তুমি যদি চলে যাও, আমার কি করে চলবে? আমি সব জানি। মুরারি প্রভুর চরণ ধরে কাঁদতে লাগলেন, তারপর প্রভু তাঁকে অনেক বুঝায়ে স্বীয় গৃহে এলেন। নদীয়া নগরে প্রভু যে বিলাস করেছেন, সে বিলাসের নিত্য সহচর ছিলেন শ্রীমুরারি গুপ্ত।
 
প্রভু সন্ন্যাস গ্রহণ করে পুরী ধামে চলে গেলেন, প্রতি বছর রথযাত্রার সময় মুরারি গুপ্ত তার জন্য বহুবিধ ভোজনসহ সপত্নীক গৌড়-ভক্তদের সঙ্গে পুরী যেতেন। সেবক গোবিন্দ সে ভোজ্য দ্রব্যের প্রত্যেকটির নাম উল্লেখ করে মহাপ্রভুকে ভোজন করাতেন।
 
বাসুদেব দত্তের এই মুরারি গুপ্তের আর।
বুদ্ধিমন্ত খানের এই বিবিধ প্রকার।।
 
– (চৈঃ চঃ অন্ত্যঃ ১০।১২১)
 
“জয় শ্রীমুরারি গুপ্ত ঠাকুর কী জয়।’’
 
 
  • February 20-21, 2022 Puri, Odisha
  • 3rd of July in 2022 Balasore, Odisha
  • August 24-26, 2022 Kurukshetra, Haryana
  • October 7, 2022 Prayagraj, Uttar Pradesh
  • November 30 -1, 2022 Agartala, Tripura
  • December 3-4, 2022 Lalabazar, Assam
  • December 7, 2022 Guwahati, Assam
  • February 17-18, 2023 Baruipur, West Bengal
  • May 27-28, 2023 Patna, Bihar
  • June 26, 2023 Bhubaneswar, Odisha
  • November 26, 2023 Gaya, Bihar
  • February 8, 2024 Delhi
  • February 13-15, 2024 Balighai, Medinipur
  • March 19, 2024 Nabadwip, West Bengal
  • May 27 2024 Florida, USA
  • June 23-24, 2024 Baripada, Odisha
  • June 26-27, 2024 Paradeep, Odisha
  • June 29-30, 2024 Cuttack, Odisha
  • July 14, 2024 Chennai, Tamilnadu
  • August 31 2024 London
  • September 07 2024 London
  • September 08 2024 Berlin (Germany)
  • September 13 2024 Canada
  • September 14-15 2024 Rochester (USA)
  • September 21 2024 New Jersey (USA)
  • Upcoming Events