Disappearance Day of Srila Sanatan Goswamipad
শ্রীসনাতন গোস্বামীর জন্ম খৃষ্টাব্দ ১৪৮৮, শকাব্দ ১৪১০ (গৌড়ীয় ২১।২-৪)। শ্রীরূপ গোস্বামীর জন্ম খৃষ্টাব্দ ১৪৯৩, শকাব্দ ১৪১৫। এঁরা রাজধানী গৌড়ের নিকটে সাকুর্মা নামক এক ক্ষুদ্র পল্লীতে মাতুল গৃহে থেকে পড়াশুনা করতেন।
গৌড়ের বাদশা হুসেন সাহ সজ্জনের মুখে শ্রীরূপ ও সনাতনের মহিমা শুনে তাঁদিগকে মন্ত্রী-পদে নিযুক্ত করলেন। অনিচ্ছুক হলেও যবন-রাজের ভয়ে তারা কার্য্য করতে লাগলেন। বাদশা তাদিগকে প্রচুর সম্পত্তি দান করেন। শ্রীরূপ সনাতন গৌড়ের রাজধানী রামকেলিতে বাস করতে লাগলেন। দেশ বিদেশ থেকে বড় বড় পন্ডিত ব্রাহ্মণ তাঁদের গৃহে আগমন করতেন। কর্ণাটক থেকে ব্রাহ্মণগণ এলে তাদের থাকার বিশেষ ব্যবস্থা তারা করতেন। গঙ্গার নিকট তাদের বসতবাটী স্থাপিত হওয়ায় অদ্যাপি ঐ গ্রাম ভট্টবাটী নামে খ্যাত। নবদ্বীপ থেকে ব্রাহ্মণ পণ্ডিতগণ রামকেলিতে এলে শ্রীরূপ সনাতন তাঁদের বিশেষ সেবা করতেন।
শ্রীরূপ সনাতনের অধ্যাপক ছিলেন—গৌড়ের অলঙ্কার স্বরূপ শ্রীবিদ্যাভূষণ পাদ। তাদের দর্শন শাস্ত্রের গুরু-নবদ্বীপের সার্ব্বভৌমের ভ্রাতা বিদ্যাবাচস্পতি। এ ছাড়া তাঁদের শিক্ষক ছিলেন—শ্রীপরমানন্দ ভট্টাচাৰ্য্য, শ্রীরামপদ ভদ্রপাদ প্রভৃতি। ভাগবতে দশম-টিপ্পনীতে এঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। শ্রীসনাতন, শ্রীরূপ ও শ্রীঅনুপম তিন ভাই শৈশব কাল থেকে ভগবদ ভক্তিভাব সম্পন্ন ছিলেন। তাঁরা গৃহ সন্নিকটে বৃন্দাবন স্মৃতিতে সুরম্য তমাল, কদম্ব, যুথিকা ও তুলসী কানন তৈরী করেন ও তার মধ্যে রাধাকুন্ড এবং শ্যামকুন্ড নামক সরোবর খনন করে নিত্য শ্রীমদনমোহনদেবের সেবায় নিমগ্ন থাকতেন। তাঁরা লোক-পরম্পরায় শ্রীগৌরসুন্দরের চরিতাবলী শুনে তার দর্শনের জন্য উৎকন্ঠিত হতেন। কিন্তু অন্তরে কে যেন বলত –তোরা ধৈর্য্যা ধারণ কর। এখানেই সেই পতিতপাবন ঠাকুরের দর্শন পাবি।
শ্রীসনাতন গোস্বামীর বয়স তখন অল্প। একদিন রাত্রে স্বপ্ন দেখছেন—এক ব্রাহ্মণ তাঁকে একখানি শ্রীমদ্ভাগবত প্রদান করছেন। শ্রীসনাতন ভাগবত পেয়ে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন স্বপ্ন ভঙ্গ হল। তিনি কাকেও দেখতে পেলেন না ; বড় দুঃখিত হলেন। সকাল বেলা স্নান পুজাদি সমাপ্ত করে তিনি বসেছেন। এমন সময় এক ব্রাহ্মণ একখানি ভাগবত নিয়ে তাঁর কাছে উপস্থিত হলেন এবং বললেন–তুমি এই ভাগবত খানি নাও ও নিত্য অধ্যয়ন কর; সর্ব্বসিদ্ধি হবে। এ কথা বলে ব্রাহ্মণ তাঁকে ভাগবত দিয়ে চলে গেলেন। যথার্থ ভাগবত প্রাপ্তিতে শ্রীসনাতনের আনন্দের সীমা রইল না। সে দিন থেকে শ্রীসনাতন শ্রীমদ্ভাগবত শাস্ত্র একমাত্র সর্ব্বশাস্ত্র-সার জ্ঞানে অধ্যয়ন করতে লাগলেন।
মদেকবন্ধো মৎসঙ্গিন মদ্গুরো মন্মহাধন।
মন্নিস্তারক মদ্ভাগ্য মদানন্দ নমোস্তুতে।।
—(শ্রীমদ্ভাগবত মহিমাস্তোত্রম্)
শ্রীসনাতন গোস্বামী শ্রীমদ্ভাগবত শাস্ত্রের বন্দনা করে বলছেন—আমার একমাত্র সঙ্গী, একমাত্র বন্ধু, গুরু, মহাধন, আমার নিস্তারকারী, আমার ভাগ্যস্বরূপ, আনন্দ-স্বরূপ, তোমাকে নমস্কার।
নদীয়ার প্রাণধন-শ্রীগৌরহরি সন্ন্যাসী হয়ে পুরী ধামে গেছেন এ সংবাদ শুনে শ্রীসনাতন ও শ্রীরূপ মূৰ্চ্ছিত হলেন। এ জীবনে আর তাঁর দর্শন পাবেন না বলে দুই ভাই কত খেদ করতে লাগলেন। এমন সময় দৈববাণী হল “তোমরা খেদ ক’র না। করুণাময় গৌরহরি শীঘ্র আসছেন।” দৈববাণী শুনে তারা আশ্বস্ত হলেন।
পাঁচ বছর সুখে পুরীতে অবস্থান করে জননী ও গঙ্গা দর্শনের জন্য মহাপ্রভু গৌড় দেশে আগমন করলেন। ভক্তগণের সুখের সীমা রইল না; বহুদিন পরে গৌরকে পেয়ে শ্রীশচীমাতা সুখে দেহ-স্মৃতি-রহিত হলেন। তিনি কয়েকদিন রন্ধন করে গৌরসুন্দরকে খাওয়ালেন। প্রভু শান্তিপুরে শ্রীঅদ্বৈত আচার্য্য ভবনে কয়েক দিন সুখে থাকবার পর রামকেলি গ্রামে এলেন।
ঐছে চলি ‘আইলা প্রভু’ রামকেলি গ্রাম।
গৌড়ের নিকট গ্রাম অতি অনুপাম।।
যাঁহা নৃত্য করে প্রভু প্রেমে অচেতন।
কোটি কোটি লোক আইসে দেখিতে চরণ।।
—(চৈঃ চঃ মধ্যঃ ১।১৬৬-১৬৭)
মহাপ্রভুর প্রভাব শুনে বাদশা হুসেন সাহ বলতে লাগলেন—
বিনা দানে এত লোক যাঁর পাছে হয়।
সেই তো গোসাঞী ইহা জানিহ নিশ্চয়।
কাজী, যবন ইহার না করিহ হিংসন।
আপন-ইচ্ছায় বুলুন যাঁহা উহার মন।।
—(চৈঃ চঃ মধ্যঃ ১।১৬৯ ১৭০)
মহাপ্রভুর শুভাগমনে রামকেলি গ্রাম আনন্দে মুখরিত হল। চতুর্দ্দিক থেকে লোক মহাপ্রভুকে দেখতে আসতে লাগলেন। কেশব ছত্রী বাদশার বিশিষ্ট প্রতিনিধি। বাদশা তাঁকে প্রভুর সম্বন্ধে কিছু জিজ্ঞাসা করলেন। কেশব ছত্রী বললেন–হাঁ শুনেছি একজন ভিখারী সন্ন্যাসী এসেছেন; তাঁর সঙ্গে দু’চারজন লোক আছে। বাদশা বললেন—আপনি কি বলছেন? সহস্র সহস্র লোক তাঁর সঙ্গে চলেছে। এ কথা শুনে কেশব ছত্রী একটু হাস্য করলেন। ছত্রীর কথায় বাদশার মন প্রসন্ন হল না। তিনি শ্রীসনাতনকে জিজ্ঞাসা করলেন। সনাতন বললেন—তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করছ কেন? তোমার মনকে জিজ্ঞাসা কর। “ যে তোমারে রাজ্য দিল সে তোমার গোসাঞা। তোমার দেশে তোমার ভাগ্যে জন্মিল আসিঞা।।” — (চৈঃ চঃ মধ্যঃ ১।১৭৬) তুমি সাক্ষাৎ দর্শন কর। মানুষের কি এরূপ শক্তি ও আকর্ষণ থাকতে পারে? এরূপ মহা আকর্ষণ করবার শক্তি ঈশ্বর ছাড়া কারও থাকে না। বাদশা শ্রীসনাতনের কথা শুনে বড় সুখী হলেন ও তিনি স্বচ্ছন্দে ভ্রমণ করুন ব’লে সকলকে জানালেন।
গঙ্গাতটে এক বৃক্ষমূলে মহাপ্রভু উপবেশন করেছেন। সঙ্গে মাত্র প্রিয় পার্ষদবৃন্দ। ক্রমেই সন্ধ্যাকাল অতীত হতে চলল। এ সময় সনাতন ও রূপ দু ভাই দুই গুচ্ছ তৃণ দস্তে ধরে মহাপ্রভুর সামনে দন্ডবৎ হয়ে পড়লেন। অন্তর্যামী মহাপ্রভু তাঁদের দেখে চিনতে পারলেন। প্রভু করুণার্দ্র হৃদয়ে দু-ভাইকে ভূমি থেকে উঠিয়ে। দৃঢ় আলিঙ্গন করলেন এবং বললেন পূর্ব্বে তোমরা যে বার বার দৈন্য-পত্র আমাকে লিখেছিলে তাতে তোমাদের স্বভাব জেনেছি। তোমরা দুই ভাই জন্মে জন্মে আমার দাস । তোমাদের জন্য আমি রামকেলিতে এসেছি। আজ থেকে তোমাদের নাম হবে—শ্রীসনাতন ও শ্রীরূপ। বাদশা পূর্ব্বে তাদের নাম দিয়েছিলেন দবিরখাস ও সাকর মল্লিক। তারপর শ্রীসনাতন ও শ্রীরূপ সমস্ত গৌর-পার্ষদগণের চরণে কৃপা প্রার্থনা করলেন। শ্রীঅদ্বৈত আচার্য্য, শ্রীনিত্যানন্দ ও শ্রীবাস আদি ভক্তগণ দুই ভাইকে প্রচুর আশীর্ব্বাদ প্রদান করলেন। অনন্তর শ্রীসনাতন রূপের কনিষ্ঠ ভ্রাতা শ্রীঅনুপম পুত্র, পরিবারবর্গের সঙ্গে প্রভুর শ্রীচরণ দর্শন, বন্দনাদি করলেন। অনুপমের পুত্র শ্রীজীব তখন শিশু। প্রভু তাঁর শিরে কর পদ্ম ধারণ করে ও শ্রীচরণ-রজ দিয়ে যেন ভবিষ্যৎ আচার্য্য সম্রাটরূপে তাঁকে বরণ করলেন। ভক্তবাঞ্ছা-কল্পতরু শ্রীগৌরহরি এইরূপে ভক্তবাসনা পূর্ণ করে পুরীর দিকে যাত্রা করলেন ও শ্রীসনাতন রূপকে আশীর্ব্বাদ করে গেলেন——“শীঘ্র সংসার বন্ধন থেকে কৃষ্ণ তোমাদের মুক্ত করে দিবেন।” শ্রীসনাতনের পিতৃদত্ত নাম ছিল অমর, শ্রীরূপের সন্তোষ এবং অনুপমের বল্লভ ছিল।
মহাপ্রভু রামকেলি থেকে চলে যাবার পর শ্রীসনাতন ও শ্রীরূপ প্রভুর শ্রীচরণ-প্রাপ্তির জন্য দুইটা পুরশ্চরণ করলেন। পরিবারবর্গকে তাঁরা চন্দ্রদ্বীপে ও ফতেয়াবাদে প্রেরণ করলেন। শ্রীরূপ ও শ্রীঅনুপম কিছু ধন রামকেলিতে শ্রীসনাতনের জন্য রেখে আর সব নৌকায় ভরে ফতেয়াবাদে নিয়ে গিয়ে সেই ধনের কিছুটা স্বজন এবং নিজ পরিবার বর্গের জন্য রাখলেন।
মহাপ্রভুর সংবাদ গ্রহণের জন্য যাঁদের নিযুক্ত করা হয়েছিল তারা এসে তার বৃন্দাবন অভিমুখে যাত্রার কথা শ্রীরূপকে বললেন। তিনি শুনে পরম সুখী হলেন এবং অনুপমকে সঙ্গে নিয়ে মহাপ্রভুর সঙ্গে মিলনের জন্য চললেন। ক্রমে চলতে চলতে প্রয়াগে এলেন। সেইখানে শ্রীমহাপ্রভুর শ্রীচরণ দর্শন লাভ করলেন। প্রয়াগে প্রভুর দর্শনের জন্য লোকের এত ভিড় যে সারাদিন দর্শনের অবকাশ হল না। সন্ধ্যাকালে গঙ্গাতটে প্রভুকে দর্শন করে দুই ভাই দৈন্য-ভরে দন্ডবৎ হয়ে পড়লেন। প্রভু দেখেই চিনতে পারলেন। ভূমি থেকে উঠিয়ে তাদিগকে আলিঙ্গন করে সমস্ত কথা জিজ্ঞাসা করলেন। তাঁরা শ্রীসনাতনের ও অন্যান্য যাবতীয় সংবাদ বললেন। মৃদু হাস্য করে প্রভু বললেন –“শীঘ্র সনাতনের বন্ধন মুক্তি হবে।” ত্রিবেণীতে মহাপ্রভুর সন্নিকটে শ্রীরূপ ও অনুপম অবস্থান করতে লাগলেন ও তাঁর উপদেশ শুনতে লাগলেন। তখন শ্রীবল্পভাচার্য্য ত্রিবেণীর পর পারে আড়াইলা গ্রামে বাস করতেন। একদিন তিনি প্রভুকে আমন্ত্রণ করে নিজগৃহে নিয়ে যান। প্রভুর সঙ্গে শ্রীরূপ ও অনুপম গেলে মহাপ্রভু শ্রীবল্লভাচার্য্যের কাছে শ্রীরূপের পরিচয় করিয়ে দিলে শ্রীবল্লভাচার্য্য তাদের আলিঙ্গন করতে উদ্যত হন। কিন্তু তাঁরা দৈন্য করে দূরে সরে যান। তা দেখে বল্লভাচার্য্য পরম সুখী হলেন। প্রভু ছলনা করে বললেন -আপনি এদের স্পর্শ করবেন না। তদুত্তরে বল্লভাচার্য্য্য বললেন—“এ দুই অধম নহে, সর্ব্বোত্তম। এঁদের বদনে সর্ব্বদা কৃষ্ণনাম নৃত্য করছে।” দুই ভাই আচার্য্যকে দন্ডবৎ করলে আচার্য্য তাদের স্নেহে আলিঙ্গন করলেন এবং বহু প্রশংসা করতে লাগলেন।
মহাপ্রভু ত্রিবেণীতে অত্যধিক লোকের ভিড় দেখে দশাশ্বমেধ ঘাটে এলেন। তথায় দশদিন অবস্থান করে শ্রীরূপ গোস্বামীকে যাবতীয় ভাগবত তত্ত্ব-সার উপদেশ দেন—
প্ৰভু কহে, – শুন রূপ ভক্তিরসের লক্ষণ।
সূত্ররূপে কহি বিস্তার না যায় বর্ণন।।
পারাপার-শূন্য গভীর ভক্তিরস-সিন্ধু।
তোমায় চাখাইতে তার কহি এক ‘বিন্দু’।।
—( চৈঃ চঃ মধ্যঃ ১৯।১৩৬-১৩৭)
মহাপ্রভু বললেন– হে রূপ! তোমার কাছে ভক্তিরসের লক্ষণ সকল সূত্রাকারে বলছি তা শুন৷ কোটি জ্ঞানীর মধ্যে একজন মুক্ত শ্রেষ্ঠ, কোটি মুক্ত মধ্যে এক কৃষ্ণ-ভক্ত শ্রেষ্ঠ। শ্রীকৃষ্ণ ভক্ত নিষ্কাম ও শান্ত। কর্মী, জ্ঞানী, যোগী প্রভৃতি অশান্ত -–ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ কামী। জীবের স্বরূপ অতি সূক্ষ্ম। জীব চিৎকণ ব্রহ্মের অনুশক্তি। জীব সুকৃতি-ফলে সাধু সঙ্গ পেলে স্বরূপ জ্ঞান লাভ করতে পারে। ভব বন্ধন তখন নাশ হয়। সদ্গুরু-কৃপায় জীব ভক্তি লতার বীজ “শ্রীকৃষ্ণ-মন্ত্র” প্রাপ্ত হয়। সে বীজ হৃদয়ক্ষেত্রে বপন করে নিত্য শ্রবণ কীর্ত্তন জল সেচন করতে থাকলে, ভক্তিলতা বৰ্দ্ধিত হয়ে পত্র পুষ্পাদিতে সুশোভিত হয়। ব্রহ্মলোক বৈকুন্ঠ ভেদ করে গোলোকে পৌছে, ভজনকারী মালী তথায় সুখে প্রেম-ফল আস্বাদন করতে পারে। ভক্তির তিনটা অবস্থা- সাধন, ভাব ও প্রেম। প্রেমভক্তি যত গাঢ় হয় তত স্নেহ, মান, প্রণয়, রাগ, অনুরাগ, ভাব ও মহাভাব উৎপন্ন হয়। ভক্তিভেদে রতি পাঁচ প্রকার। শান্ত, দাস্য, সখ্য, বাৎসল্য ও মধুর রতি। শান্ত ভক্ত নবযোগেন্দ্র ও সনকাদি। দাস্য ভক্ত—ব্রহ্মা, শিব, নারদ, ব্রজে, রক্তক পত্রকাদি। সখ্য ভক্ত-অৰ্জ্জুন, ভীম ও ব্রজে সুবল, শ্রীদামাদি। বাৎসল্য-ভক্ত বসুদেব, দেবকী, নন্দ ও যশোদা। মধুর ভক্ত-ব্রজে গোপীগণ। দ্বারকায় রুক্মিণী সত্যভামাদি। “এই ভক্তি-রসের করিলাম দিগ্দরশন। ইহার বিস্তার মনে করিহ ভাবন।। ভাবিতে ভাবিতে কৃষ্ণ স্ফুরয়ে অন্তরে। কৃষ্ণ কৃপায় অজ্ঞ পায় রস-সিন্ধু পারে।।”—(চৈঃ চঃ মধ্যঃ ১৯।২৩৪ ২৩৫ ) মহাপ্রভু শ্রীরূপকে এই সমস্ত উপদেশ দেবার পর তাঁকে বৃন্দাবনে যেতে আদেশ করলেন। তিনিও বারাণসীর দিকে যাত্রা করলেন। শ্রীরূপ ও অনুপম দুই ভাই প্রভুর বিচ্ছেদে ব্যথিত হৃদয়ে বৃন্দাবনের দিকে চলতে লাগলেন।