Dissapearance Day of Srila Aviram Gopal Thakur
শ্রীঅভিরাম গোপাল ঠাকুরের তিরোভাব তিথি শ্রীঅভিরাম গোপাল ঠাকুরের অন্য নাম ছিল শ্রীরাম দাস। শ্রীকৃষ্ণ লীলায় যিনি শ্রীদাম নামক গোপ-সথা ছিলেন, তিনি অধুনা অভিরাম বা রাম দাস নামে খ্যাত। অভিরাম গোপাল ঠাকুর খানাকুল কৃষ্ণনগরে বাস করতেন। তিনি নিত্যানন্দের প্রিয় পাত্র ছিলেন। অভিরাম গোপাল ঠাকুরের পত্নীর নাম শ্রীমালিনী দেবী। শ্রীগোপীনাথ জীউ অভিরাম গোপাল ঠাকুরকে স্বপ্নে দর্শন দিয়ে খানাকুল কৃষ্ণনগরে প্রকট হন। প্রবাদ তিনি ভূমির মধ্যে ছিলেন স্বপ্নে বলেন- আমি এখানে আছি, আমাকে বের করে পূজা কর। অতঃপর শ্রীঅভিরাম সে স্থান খনন করতেই ভূগর্ভে মনোহর শ্রীগোপীনাথ বিগ্রহ প্রাপ্ত হন। ঐ স্থানের নাম হয় রাম কুন্ড। গোপীনাথ প্রকট কুভের দিব্যজল। স্নান পানে হৈলা সবে আনন্দ বিহ্বল।। ‘রামকুন্ড’ বলি খ্যাতি হইল তাহার। লোক গতায়াত যত সীমা নাই তার।। – (শ্রীভক্তি রত্নাকর ৪র্থ তরঙ্গ) একদিন শ্রীঅভিরাম গোপাল ঠাকুর কৃষ্ণ-ভাবাবিষ্ট হয়ে সখ্য রসে বংশী বাজাতে ইচ্ছা করেন। প্রেমানন্দে মত্ত হয়ে ঠাকুর চতুর্দিকে বংশীর অনুসন্ধান করতে লাগলেন। এমন সময় সামনে একটী বৃহৎ কাষ্ঠ খন্ড দেখলেন। ষোলজন লোক সেই কাষ্ঠ-খন্ড তুলতে সমর্থ হচ্ছিল না। তিনি সেই কাষ্ঠ-খন্ড তুলে বংশী তৈরী করে বাজাতে লাগলে। “রাম দাস মুখ্যশাখা সখ্য প্রেমরাশি। ষোল সাঙ্গের কাষ্ঠ যে তুলি কৈল বাঁশী।।” -(চৈতন্য চরিতামৃত আদি ১১।১৬)
শ্রীঅভিরাম ঠাকুরের একটী প্রসিদ্ধ চাবুক ছিল। তার নাম ছিল জয়-মঙ্গল। তিনি যাকে সেই চাবুক মারতেন তার কৃষ্ণ প্রেমোদয় হত। একদিন শ্রীনিবাস আচার্য্য তাঁর দর্শনের জন্য এলেন। তাঁর অঙ্গে ঠাকুর তিনবার ঐ চাবুক স্পর্শ করতেই, ঠাকুরের পত্নী শ্রীমালিনী দেবী বলতে লাগলেন-ঠাকুর! আর মোরো না, শান্ত শ্রীনিবাস বালক; তোমার চাবুক স্পর্শে সে অধীর হয়ে পড়বে। শ্রীনিবাস আচার্য্যের চাবুক-স্পর্শে কৃষ্ণ প্রেমোদয় হল। শ্রীগৌরসুন্দর যখন শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুকে গৌড় দেশে প্রচার কার্য্য করতে আদেশ করেন, শ্রীনিত্যানন্দের সঙ্গে শ্রীরামদাস, শ্রীগঙ্গাধর দাস প্রভৃতিকে দিয়েছিলেন। শ্রীঅভিরাম গোপাল ঠাকুরকে দেখে পাষন্ডগণ কম্পমান হত। তিনি শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত ছিলেন। শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর ইচ্ছানুসারে তিনি বিবাহ করেছিলেন। হুগলী জেলার অন্তর্গত কৃষ্ণনগর আমতা এবং বাঁকুড়া জেলার অন্তর্গত বিষ্ণুপুর, কোতলপুর প্রভৃতি স্থানে শ্রীঅভিরাম ঠাকুরের শিষ্যবর্গের বংশধরগণ বসবাস করেন। শ্রীপাট খানাকুল কৃষ্ণনগরে শ্রীঅভিরাম ঠাকুরের সেবিত শ্রীশ্রীগোপীনাথ জীউ বিরাজ করছেন। শ্রীঅভিরাম গোপাল ঠাকুর চৈত্র কৃষ্ণ সপ্তমীতে অন্তর্ধান হন।