Nabadwip Dham Parikrma
তৃতীয় দিনের পরিক্রমা
৪ মার্চ ২০২৩
(শ্রীকোলদ্বীপ ও শ্রীঋতুদ্বীপ পরিক্রমা)
শ্রী কোলদ্বীপ ও শ্রীঋতুদ্বীপ —এই দিন পরিক্রমা পার্টি গঙ্গা পার হয়ে কোলদ্বীপ দর্শন করেন। গঙ্গা এখানে পঞ্চাবেণীরূপে প্রবাহিতা। গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী, অলকানন্দা ও গণ্ডকী এই পাঁচটি নদী একধারায় প্রবাহিত। কোল অর্থাৎ বরাহ। সত্যযুগে বাসুদেব নামে এক ব্রাহ্ম ণকে ভগবান এস্থানে বরাহরূপে দর্শন দিয়েছিলেন। বরাহদেবের পর্বত সমান বিশাল আকৃতি ছিল। এস্থানে পোড়ামা বা যোগমায়ার মন্দির। বর্তমানে এটি শহর নবদ্বীপ নামে পরিচিত। এখানে শ্রীমন্মহাপ্রভু বৈষ্ণব অপরাধী গোপাল-চাপালকে রোগ হতে মুক্ত করেছিলেন এবং শ্রীমদ্ভাগবত পাঠক শ্রীদেবানন্দকে বাক্য দণ্ড দিয়ে শ্রীবাস পণ্ডিতের চরণে অপরাধ থেকে মুক্ত করেছিলেন। এই দ্বীপটি “পাদসেবন” ভক্তির পীঠস্থান।
শ্রীঋতুদ্বীপ—ষড়ঋতু এই নবদ্বীপ ধামে শ্রীমন্মহাপ্রভুর সেবার জন্য সাক্ষাৎ বিরাজমান। তাই ঋতুদ্বীপ নাম। এই স্থানে অন্যান্য ঋতু বসন্ত ঋতুর প্রশংসা করেছিলেন কারণ এই ঋতুতে শ্রীমন্মহাপ্রভু আবির্ভূত হয়েছিলেন। এই দ্বীপটি “অৰ্চ্চা” ভক্তির পীঠস্থান।
চাপাহাটী—এই স্থানটি বর্তমানে বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী থানার অন্তর্গত। এখানে বিজ রাণীনাথের সেবিত শ্রীগৌরগদাধরের বিশাল শ্রীবিগ্রহ বিরাজমান। সত্যযুগে দ্বিজ বাণীনাথ নামে এক ব্রাহ্মাণ বাস করতেন এবং প্রতিদিন চাঁপাফুল নিয়ে রাধাগোবিন্দের সেবা করতেন। তাঁর সেবায় সন্তুষ্ট হয়ে রাধাগোবিন্দ গৌরহরিরূপে তাঁকে দর্শন দেন। ব্রাহ্মাণ চাঁপাফুলের বর্ণযুক্ত গৌরহরিকে দর্শন করে ব্যাকুল হন। তখন গৌরহরি তাঁকে আশ্বাস দিয়ে কলিতে নিজ অবতারের কথা বর্ণন করে। শ্রীনবদ্বীপ ধামের মহিমার কথা বলেন এবং সেই যুগে বাণীনাথ রূপে আমার পার্ষদরূপে অবতীর্ণ হবে একথা জানান। তাছাড়া কবি জয়দের স্ত্রী পদ্মাবতী সহ এই স্থানে বসে রাগমার্গে শ্রীরাধাগোবিন্দের সেবা করতেন। তিনি এই স্থানে শ্রীমন্মহাপ্রভুর দর্শন পান। এই স্থানে পূর্বে বহু চাপাফুলের বাগান ছিল এবং চাপাফুলের হাট বসত তার থেকেই “ঠাপাহাটী” যেন হয়েছে।
সমুদ্রগড়—এই চাপাহাটী হতে অনতীপুরে সমদ্রগড় স্থানটি বিরাজমান। সমুদ্রদের গঙ্গার মাধ্যমে গড়ে গড়ে এস্থানে এসে শ্রীমন্মহাপ্রভুর কৃপা পেয়েছিলেন। সেজন্য সমুদ্রগড় নাম হয়েছে।