Disappearance Day of Srila Brakeswar Pandit Goswami

শ্রীমান্মহাপ্রভু নবদ্বীপ লীলার সময়, সন্ন্যাস গ্রহণান্তর পুরী গমনের সময় এবং পুরীতে অবস্থানের সময় শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিত তাঁর সঙ্গে ছিলেন। শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিতের জন্মস্থান ত্রিবেণীর কাছে গুপ্তিপাড়ায়। শ্রীবক্রেশ্বর পণ্ডিত নৃত্য করতে পারতেন। মহাপ্রভু যখন প্রথমে নবদ্বীপে মহাসংকীৰ্ত্তন-লীলা আরম্ভ করেন তখন বক্রেশ্বর পণ্ডিত একজন বড় গায়ক ও নর্ত্তক ছিলেন। মহাপ্রভু যখন রামকেলিতে যান তখন বক্রেশ্বর পণ্ডিত তাঁর সঙ্গে ছিলেন। বজ্রের পণ্ডিতের কৃপায় দেবানন্দ পন্ডিত উদ্ধার লাভ করেন।
পূর্ব্বে ভাগবত শাস্ত্রের অদ্বিতীয় অধ্যাপক বলে দেবানন্দ পন্ডিতের খ্যাতি ছিল। একদিন শ্রীবাস পণ্ডিত তাঁর পাঠ শ্রবণ করতে যান এবং প্রেমে ক্রন্দন করতে থাকেন। সে সময়ে দেবানন্দের কতিপয় অজ্ঞ ছাত্র পাঠ শ্রবণের বিঘ্ন হচ্ছে মনে করে শ্রীবাস পণ্ডিতকে গৃহের বাহিরে নিয়ে রেখে দেয়। ভক্ত ভাগবতের প্রতি এইরূপ অবজ্ঞা স্বচক্ষে দেখেও দেবানন্দ পন্ডিত কোন প্রতিবাদ করেন নাই। তাই মহাভাগবত চরণে তাঁর অপরাধ হয়।
শ্রীমহাপ্রভু আত্মপ্রকাশ করে দেবানন্দের এরূপ মহাভাগবত অবজ্ঞার কথা জানায়ে, ভাগবত সম্বন্ধে অনেক উপদেশ দান করেন। তিনি বলেন— যারা গ্রন্থ-ভাগবত পড়ে, কিন্তু ভক্ত ভাগবতকে সমাদর করে না তারা অপরাধী। শত শত কল্পেও ভাগবত পড়ে তারা প্রেম পাবে না। ভক্ত-ভাগবত ও গ্রন্থ-ভাগবত অভিন্ন। গ্রন্থ-ভাগবত জানতে হলে অকপটে ভক্ত ভাগবতের সেবা করতে হয়। মহাপ্রভু দেবানন্দকে উপেক্ষা করলেন। কৃষ্ণ-প্রেম প্রদান করলেন না।
একদিন শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিত নবদ্বীপের কুলিয়ায় এক ভক্ত গৃহে সন্ধ্যায় নৃত্য-গীত করতে লাগলেন। দেবানন্দ পন্ডিত খবর পেয়ে সেখানে গেলেন। এবং বক্রেশ্বর পন্ডিতের দিব্য প্রেমাবেশ দেখে মুগ্ধ হলেন। ক্রমে লোকের খুব ভিড় হতে লাগল। শ্রীদেবানন্দ পন্ডিত তখন একখানি বেত্র হাতে সে ভিড় সামলাতে লাগলেন- যেন শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিত ঠাকুরের নৃত্য-কীৰ্ত্তনে কোন বিঘ্ন না হয়–এ রূপে দ্বিপ্রহর রাত্রি পর্য্যন্ত শ্রীবক্রেশ্বর পণ্ডিত মহা নৃত্য গীত করলেন। পরে বক্রেশ্বর পন্ডিত বসলে দেবানন্দ পন্ডিত তাঁকে দন্ডবৎ করলেন। তাঁর এ সেবায় শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিত বড় খুসী হয়ে তাঁকে আশীর্ব্বাদ করলেন—“কৃষ্ণ ভক্তি হউক”। সে দিন থেকে দেবানন্দ পন্ডিতের কৃষ্ণ ভক্তি হল। ভক্তের আশীর্ব্বাদে কৃষ্ণে ভক্তি হয়।
শ্রীমহাপ্রভু যখন পুরীধাম থেকে জননী ও গঙ্গা দর্শনের জন্য কুলিয়ায় এলেন, তিনি দেবানন্দ পন্ডিতকে এবার কৃপা করলেন।
প্রভু বলে,— তুমি যে সেবিলা বক্রেশ্বর।
অতএব হৈলা তুমি আমার গোচর।।
বক্রেশ্বর পন্ডিত—প্রভুর পূর্ণ শক্তি।
সেই কৃষ্ণ পায়, যে তাহারে করে ভক্তি।।
বক্রেশ্বর হৃদয়ে কৃষ্ণের নিজ ঘর।
কৃষ্ণ নৃত্য করেন নাচিতে বক্রেশ্বর।।
যে তে স্থানে যদি বক্রেশ্বর-সঙ্গ হয়।
সেই স্থান সৰ্ব্বতীর্থ শ্রীবৈকুণ্ঠময়।।
—(চৈঃ ভাঃ অঃ ৩।৪৯২-৪৯৬)
এ ভাবে শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুর শ্রীবক্রেশ্বরের মহিমা গান করেছেন। শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিত পূর্ব্বে নবদ্বীপে বাস করতেন। পরবর্ত্তী কালে মহাপ্রভুর সেবার জন্য তিনি পুরীতে থাকতেন।
পরমানন্দ পুরী, আর স্বরূপ-দামোদর।
গদাধর, জগদানন্দ শঙ্কর বক্রেশ্বর।।
দামোদর পণ্ডিত, ঠাকুর হরিদাস।
রঘুনাথ বৈদ্য আর রঘুনাথদাস।।
ইত্যাদিক প্রভু সঙ্গী বড় ভক্তগণ।
নীলাচলে রহি প্রভুর করেন সেবন।।
(চৈঃ চঃ আদি ১০।১২৫-১২৭)
কথিত আছে পরবর্ত্তী কালে কাশীমিশ্র ভবনে শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিত বাস করতেন। সেখানে শ্রীশ্রীরাধাকান্ত বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিতের শিষ্য শ্রীগোপালগুরু গোস্বামী। শ্রীগোপালগুরু গোস্বামীর শিষ্য শ্রীধ্যানচন্দ্র গোস্বামী ধ্যান চন্দ্র পদ্ধতি নামে যে গ্রন্থ লিখেছেন, তাতে আছে—
“যিনি পূর্ব্বে ব্রজে নৃত্যগীত বিশারদ তুঙ্গবিদ্যা গোপী ছিলেন অধুনা তিনি শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিত নামে খ্যাত হন। আষাঢ়ী কৃষ্ণাপঞ্চমী তিথি শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিতের আবির্ভাব দিন। তিনি অপ্রকট লীলাবিষ্কার করেন আষাঢ় শুক্লাষষ্ঠীতে।
উৎকলের কবি শ্রীগোবিন্দ দেব শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিতের পরিবারভুক্ত,তিনি সপ্তদশ শকের শেষভাগে “শ্রীশ্রীগৌর কৃষ্ণোদয়” নামে একখানি কাব্য গ্রন্থ রচনা করেন। গৌড়ীয় সম্প্রদায়ের আচার্য্যবর নিত্যলীলা প্রবিষ্ট ওঁ বিষ্ণুপাদ শ্রীশ্রীমদ্ ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী প্রভুপাদ তা প্রকাশ করেন।
পদকর্ত্তা শ্রীবৃন্দাবন দাস মহাপ্রভুর সংকীর্ত্তন-রাস মহোৎসবেশ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিতের নাম স্মরণ করেছেন।
জীবের ভাগ্যে অবনী আইলা গৌরহরি।
ভুবন মোহন রূপ সোনার পুতলী।।
হরিনামামৃত দিয়া করিলা চেতন।
কলিযুগে ছিল যত জীব অচেতন।।
নিত্যানন্দ অদ্বৈত আচার্য্য গদাধর।
সকল ভকত মাঝে সাজে পবর।।
খোল করতাল মন্দিরা ঘন রোল।
ভাবের আবেশে গোরা বলে হরিবোল।।
ভুজ তুলি নাচে পহু শচীর নন্দন।
রামাই সুন্দর নাচে শ্রীরঘুনন্দন।।
শ্রীনিবাস হরিদাস আর বক্রেশ্বর।
দ্বিজ হরিদাস নাচে পন্ডিত শঙ্কর।।
জয় জয় জয় ধ্বনি জগতে প্রকাশ।
আনন্দে মগন ভেল বৃন্দাবন দাস।।
নীলাচলে রথাযাত্রাকালে যে চারটি সম্প্রদায় গঠিত হত, তার মধ্যে এক সম্প্রদায়ের প্রধান নৃত্যকার হলেন শ্রীবক্রেশ্বর পন্ডিত। শ্রীমদ্ কৃষ্ণদাস কবিরাজ বক্রেশ্বর পন্ডিতের মাহাত্ম্য প্রসঙ্গে লিখেছেন
বক্রেশ্বর পন্ডিত প্রভুর বড় ভৃত্য।
এক ভাবে চব্বিশ প্রহর যাঁর নৃত্য।।
আপনে মহাপ্রভু গান যাঁর নৃত্যকালে।
প্রভুর চরণ ধরি বক্রেশ্বর বলে।।
দশ সহস্র গন্ধর্ব্ব মোরে দেহ চন্দ্র মুখ।
তারা গায় মুঞি নাঁচো তবে মোর সুখ।।
প্রভু বলে তুমি মোর এক শাখা।
আকাশে উড়িতাম যদি পাঙ আর পাখা।।
—(চৈঃ চঃ আদি ১০।১৭-২০)
 
  • February 20-21, 2022 Puri, Odisha
  • 3rd of July in 2022 Balasore, Odisha
  • August 24-26, 2022 Kurukshetra, Haryana
  • October 7, 2022 Prayagraj, Uttar Pradesh
  • November 30 -1, 2022 Agartala, Tripura
  • December 3-4, 2022 Lalabazar, Assam
  • December 7, 2022 Guwahati, Assam
  • February 17-18, 2023 Baruipur, West Bengal
  • May 27-28, 2023 Patna, Bihar
  • June 26, 2023 Bhubaneswar, Odisha
  • November 26, 2023 Gaya, Bihar
  • February 8, 2024 Delhi
  • February 13-15, 2024 Balighai, Medinipur
  • March 19, 2024 Nabadwip, West Bengal
  • May 27 2024 Florida, USA
  • June 23-24, 2024 Baripada, Odisha
  • June 26-27, 2024 Paradeep, Odisha
  • June 29-30, 2024 Cuttack, Odisha
  • July 14, 2024 Chennai, Tamilnadu
  • August 31 2024 London
  • September 07 2024 London
  • September 08 2024 Berlin (Germany)
  • September 13 2024 Canada
  • September 14-15 2024 Rochester (USA)
  • September 21 2024 New Jersey (USA)
  • Upcoming Events