Rama Ekadashi

কার্ত্তিক কৃষ্ণপক্ষীয়া ‘রমা’ একাদশীর ব্রতোপবাস
 
অদ্য কেশিদৈত্যঘাতন শ্রীকেশবের ষোড়শোপচারে পূজা। পঞ্চগব্য পঞ্চমৃতে শ্রীকেশবের স্নান। নৈবেদ্য, শালি তণ্ডুলের অন্ন, বিবিধ ব্যঞ্জন, ক্ষীর, পায়স, বিবিধ মিষ্টি ও বিবিধ ফলাদি অর্পণ। পদ্ম, দ্রোণ, নাগেশ্বর, কেতকী, চম্পক, মালতী, যুথিকা ও পারিজাতাদি পুষ্প অর্পণ করবে।
 
“ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়” এ মন্ত্রে যাবতীয় উপচার সমর্পণ। দ্বিপ্রহরে ভোগ আরতি সংকীর্ত্তন দণ্ডবৎ স্তুতি প্রভৃতি। অনন্তর ভক্তসঙ্গে কেশব মাহাত্ম্য শ্রবণ।
 
কথারম্ভ-স্তব– কেশব ক্লেশহরণ নারায়ণ জনাৰ্দ্দন।
গোবিন্দ পরমানন্দ মাং সমুদ্ধর মাধব।।
 
তথাহি গীত—
 
“ব্রজজন পালন,
অসুরকুল নাশন,
নন্দগোধন রাখওয়ালা।
গোবিন্দ মাধব,
নবনীত তস্কর,
সুন্দরনন্দ গোপালা।।
 
 
 
 
—(ঠাকুর ভক্তিবিনোদ)
 
কৃষ্ণ ব্রজজন পালন এবং অসুরকুল নাশন। ব্রজবাসিগণ যেমন শ্রীকৃষ্ণকেভালবাসেন, শ্রীকৃষ্ণও তেমনি ব্রজবাসিগণকে ভালবাসেন। ভগবান ভক্তিবশে নন্দরাজকুমার হয়ে, নিজকে গোপাভিমান করে নিত্য বৃন্দাবনের বনে বনে গোচারণ লীলা করছেন। বৃন্দাদেবীর পরম সৌভাগ্য। ব্রহ্মা ও লক্ষ্মীর আরাধিত চরণরেণু নিত্য শিরে ধারণ করছেন। বৃন্দাবন শ্রীকৃষ্ণের সর্ব্বেন্দ্রিয়ের সুখদায়িনী।
 
বৃন্দাবনবিলাসের বাধাস্বরূপ হল কংসের অনুচর দৈত্যগণ পূতনা, শকটাসুর, তৃণাবর্ত্ত, বকাসুর, অঘাসুর, বৎসাসুর, ধেনুকাসুর, অরিষ্টাসুর, ব্যোমাসুর ও কেশিদৈত্য প্রভৃতি।
 
কেশী তু কংসপ্রহিতঃ খুৱৈম্মহীং,
মহাহয়ো নির্জ্জরয়ন্ মনোজবঃ।
সটাবধৃতাভ্রবিমানসঙ্কুলং,
কুৰ্ব্বন নভো হেষিতভীষিতাখিলঃ।।
 
(ভাঃ ১০/৩৭| ১)
 
কংস যত দৈত্যগণকে প্রেরণ করেছে, কেহই পুনঃ কংস সন্নিধানে ফিরে যেতে পারেনি। তাই কংসের মনে বড়ই খেদ। কংস মনে করে প্রেরিত অসুরগণ বলহীন ও বুদ্ধিহীন। তাই তারা সামান্য গোপ শিশুর হাতে মরছে। কেশিদৈত্যকে ডেকে বলতে লাগল—রে কেশি ! আমি এতদিন দৈত্যগণকে বহু বলশালী মনে করতাম কিন্তু এ বিশ্বাস আমি একেবারেই হারালাম। তারা ব্রজে সামান্য দুটি শিশুর কাছে মারা পড়ল। অধুনা আমি তোমাকে তাদের অপেক্ষা অধিক বলশালী ও বুদ্ধিশালী বলে মনে করছি। তুমি একবার ব্রজে গমন কর এবং ব্রজজনের সহিত রাম-কৃষ্ণকে মেরে আমাকে সুখী কর।
 
কেশিদৈত্য কংসের এরূপ বচন শুনে বলদর্পে আটোপ আস্ফালন করতে করতে সভাস্থল কম্পমান করতঃ বলতে লাগল—মহারাজ ! আমি অন্যের ন্যায় হীনবল নহি। আমি আজ ব্রজভূমিকে ও রাম-কৃষ্ণকে কিরূপে বিনাশ বিরক্ত করি আপনি সাক্ষাৎ দেখতে পাবেন।
 
কংস কেশিকে ধন্যবাদ প্রদান করল। তারপর মহাদৈত্য কেশি ভীষণ অশ্বমূর্তি ধারণপূর্বক ত্রিলোক কম্পমান করতে করতে বৃন্দাবনে প্রবেশ করল। অনন্তর তার কর্কশ হ্রেষারবে বৃন্দাবনস্থ যাবতীয় জীবজন্তুর মনে ভয়োৎপাদন হল। বিশালকায় কেশির স্বন্ধস্থিত কঠোর রোম কম্পনে আকাশস্থিত মেঘগণ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে উড্ডীয়মান হচ্ছিল। ক্ষুরাঘাতে গোকুলের বড় বড় বৃক্ষ, গৃহাদি চূর্ণবিচূর্ণ করছিল। মুখব্যদনপূর্বক গো-মহিষ প্রভৃতিকে গ্রাস করতে ধাবিত হচ্ছিল। নন্দ মহারাজের পালিত ব্রজভূমিস্থ সকলেই যেন মহাদৈত্যের অত্যাচারে বিপদাপন্ন হচ্ছিল।
 
এসময় ব্রজগোপ-গোপীগণ কৃষ্ণের প্রতি বলতে লাগলেন—দেখ দেখ নীলমণি কৃষ্ণ, আজ তোমার গোধন,ব্রজজন কিরূপ বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত ব্রজজনের যত বিপদ এসেছিল সবই তো তোমার প্রভাবে নষ্ট হল। আজ কেশিদৈত্যের হাত থেকে ব্রজবাসিগণ কি রক্ষা পাবে না? হে কৃষ্ণ! হে কৃষ্ণ! তোমার ব্রজজনের প্রতি দৃষ্টিপাত কর।
 
তৎকালে মহাকলরবে সকলেই কৃষ্ণকে ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করলেন। ব্রজজনের ভয়হারী শ্রীহরি অসুরের অত্যাচার সহনে অসমর্থ হয়ে সকলের নিষেধ সত্ত্বেও মহাদ্রুতপদে বাইরে এলেন এবং অতি শীঘ্রই অসুরের সামনে এসে দাঁড়ালেন। অসুরটি মহাক্রোধে মুখব্যদনপূর্বক কৃষ্ণকে গ্রাস করতে উদ্যত হল। মহৈশ্বর্যশালী ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ তৎকালে বামহস্ত তার মুখমণ্ডলে প্রবেশ করিয়ে মহাবেগে ঐ দৈত্যকে ভূতলে নিক্ষেপ করলেন। দৈত্যটি ভূমি হতে উঠে পুনঃ কৃষ্ণকে আক্রমণ করতে উদ্যত হ’লে শ্রীকৃষ্ণ অনায়াসে দৈত্যের পশ্চাপদ দুটি ধরে ভূমিতলে সজোরে আঘাত করলেন। এবার পাপমতি দৈত্য রুধির বমন করতে করতে উর্দ্ধনয়নে প্রাণ শূন্য হয়ে ভূতলে পড়লো। দেবতাগণের মহাঅরি কেশিদৈত্য প্রাণ শূন্য হয়ে ভূতলে শয়ন করছে ; দেবতাগণ, দেববধূগণ, ঋষিগণ সিদ্ধচারণগণ সকলেই আনন্দভরে নন্দনন্দনের উপর পুষ্পবৃষ্টি দুন্দুভি ধ্বনিসহ জয়জয়কার প্রদানপূর্বক নৃত্য গীত করতে লাগলেন।
কেশিদৈত্যবধের পর ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ রক্তরঞ্জিত হস্তখানি যমুনার যে ঘাটে ধৌত করেছিলেন, সেই ঘাটের নাম হল কেশিঘাট। হোলির দিন ভগবান্ কেশিদৈত্যকে বধ করেছিলেন। ব্রজবাসীগণ আজও হোলির দিনে কেশিদৈত্যের কুশপুত্তলিকা জ্বালিয়ে থাকে। ভগবান্ কেশিকে বধ করে কেশব নাম ধারণ করেছিলেন।
 
যাঁরা শ্রীহরিবাসরে শ্রীহরির কেশিদৈত্য বধ কথা শ্রবণ করবেন, তাঁরা অনায়াসে ভুক্তি মুক্তি সিদ্ধি প্রাপ্ত হতে পারবেন।
হরি দিনে কেশিদৈত্য বধের শ্রবণ।
যাবতীয় ভয় তার হয় বিমোচন।।
গোবিন্দ লীলাকথা অনন্ত অপার।
শ্রবণ কীৰ্ত্তনে জীব হয় ভব পার।।
গুরু পুরীপাদপদ্ম করিয়া স্মরণ।
হরিজন সুখে কৈল কথা সমাপণ।।
 
 
ইতি রমা একাদশী বাসরে কেশব মহিমা কথা সমাপন।
 
 
 
  • February 20-21, 2022 Puri, Odisha
  • 3rd of July in 2022 Balasore, Odisha
  • August 24-26, 2022 Kurukshetra, Haryana
  • October 7, 2022 Prayagraj, Uttar Pradesh
  • November 30 -1, 2022 Agartala, Tripura
  • December 3-4, 2022 Lalabazar, Assam
  • December 7, 2022 Guwahati, Assam
  • February 17-18, 2023 Baruipur, West Bengal
  • May 27-28, 2023 Patna, Bihar
  • June 26, 2023 Bhubaneswar, Odisha
  • November 26, 2023 Gaya, Bihar
  • February 8, 2024 Delhi
  • February 13-15, 2024 Balighai, Medinipur
  • March 19, 2024 Nabadwip, West Bengal
  • May 27 2024 Florida, USA
  • June 23-24, 2024 Baripada, Odisha
  • June 26-27, 2024 Paradeep, Odisha
  • June 29-30, 2024 Cuttack, Odisha
  • July 14, 2024 Chennai, Tamilnadu
  • August 31 2024 London
  • September 07 2024 London
  • September 08 2024 Berlin (Germany)
  • September 13 2024 Canada
  • September 14-15 2024 Rochester (USA)
  • September 21 2024 New Jersey (USA)
  • Upcoming Events