Srila Pundarik Vidyanidhi Appearance Day

 
 
শ্রীগৌরসুন্দর পুন্ডরীককে বাপ বলে ডাকতেন। বিদ্যানিধি মহাশয় প্রেমনিধি বা আচার্য্যনিধি নামেও পরিচিত ছিলেন। শ্রীমদ্ কবিকর্ণপুর তাঁকে বৃষভানু রাজা বলতেন। “বৃষভানু ভয়াখ্যাতঃ পুরা যে ব্রজমন্ডলে। অধুনা পুণ্ডরীকাক্ষ বিদ্যানিধি মহাশয়ঃ।। (গৌরগণোদ্দেশ দীপিকা ৫৪ সংখ্যা) পূর্ব্বে ব্রজমণ্ডলে যিনি বৃষভানু রাজা ছিলেন অধুনা তিনি শ্রীপুন্ডরীক বিদ্যানিধি মহাশয়। তিনি শ্রীমাধবেন্দ্র পুরীপাদের শিষ্য ছিলেন। শ্রীগদাধর পন্ডিত তাঁকে গুরু পদে বরণ করেছিলেন। তাঁর পিতার নাম বানেশ্বর (মতান্তরে শুক্লাম্বর) ব্রহ্মচারী ও মাতার নাম—গঙ্গাদেবী। তাঁর পত্নীর নাম রত্নাবতী। তাঁর পিতা বারেন্দ্র শ্রেণীর ব্রাহ্মণ ছিলেন। চট্টগ্রাম শহরের ছয়ক্রোশ উত্তরে হাট হাজারি থানার একক্রোশ পূর্ব্বে মেঘলা গ্রামে তাঁর শ্রীপাট ছিল। বিদ্যানিধি মহাশয়ের ভজন মন্দিরটি অধুনা নিতান্ত জীর্ণ অবস্থা প্রাপ্ত হয়েছে।
 
শ্রীমদ্ বৃন্দাবন দাস ঠাকুর শ্রীপুন্ডরীক বিদ্যানিধির বিশেষ বিবরণ দিয়েছেন—
 
চাটিগ্রামে জন্ম বিপ্র পরম পণ্ডিত।
পরম-স্বধর্ম সর্ব্ব-লোক-অপেক্ষিত।।
কৃষ্ণভক্তি-সিন্ধু-মাঝে ভাসে নিরন্তর।
অশ্রু-কম্প-পুলক-বেষ্টিত কলেবর।।
গঙ্গাস্নান না করেন পদস্পর্শভয়ে।
গঙ্গা দরশন করে নিশার সময়ে।।
গঙ্গায় যে-সব লোক করে অনাচার।
কুল্লোল, দত্তধাবন, কেশ-সংস্কার।।
এ সকল দেখিয়া পায়েন মনে ব্যথা।
এতেকে দেখেন গঙ্গা নিশায় সর্বথা।।
বিচিত্র বিশ্বাস আর এক শুন তান।
দেবার্চ্চন-পূর্বে করে গঙ্গাজল-পান।।
 
—শ্রীচৈঃ ভাঃ মধ্য ৭।২৩-২৮)
 
ভগবান্ শ্রীগৌরসুন্দর নবদ্বীপে মহাভাব প্রকাশ করে বিদ্যানিধি নাম নিয়ে ক্রন্দন করেছিলেন—
 
নৃত্য করি, উঠিয়া বসিলা গৌর-রায়।
‘পুন্ডরীক বাপ বলি’ কান্দে উভরায়।।
পুন্ডরীক আরে মোর বাপরে বন্ধুরে।
কবে তোমা দেখিব আরে রে বাপরে।।
হেন চৈতন্যের প্রিয়পাত্র বিদ্যানিধি।
হেন সব ভক্ত প্রকাশিলা গৌরনিধি।।
 
—–(শ্ৰীচৈঃ ভাঃ মধ্য ৭।১২-১৪)
 
শ্রীবিদ্যানিধি মহাশয় বিষয়ীর মত অবস্থান করতেন। শ্রীনবদ্বীপ নগরেও তাঁর এক বসত বাটী ছিল। শ্রীমুকুন্দ বেজ ওঝা তাঁর দেশের লোক ছিলেন। তিনি নবদ্বীপ মায়াপুরে এলে শ্রীমুকুন্দ তাঁকে কীৰ্ত্তন শুনাতেন। একবার শ্রীমুকুন্দ গদাধর পন্ডিতকে সঙ্গে নিয়ে পুন্ডরীক বিদ্যানিধির বাটীতে এসেছিলেন। গদাধর পন্ডিত বিদ্যানিধিকে প্রণাম করলেন। বিদ্যানিধি মহাশয় তাঁকে বসতে বললেন। বিদ্যানিধি মহাশয় মুকুন্দের নিকট গদাধর পন্ডিতের পরিচয় পেলেন। শ্রীগদাধর পন্ডিত দেখতে পেলেন বিদ্যানিধি মহাশয় বাহ্যতঃ রাজপুত্রের ন্যায়। তাঁর মূল্যবান্ খাট। তাতে দিব্য শয্যা ও পট্ট নেতের বালিশ, উপরে দিব্যচন্দ্রাতপ। পাশে জলের ঝারি ও তাম্বুলসজ্জিত পিতলের বাটা। আলবাটীর সম্মুখে বিশাল আয়না। দুই পাশে দুইজন ভৃত্য ময়ুরের পাখা নিয়ে ব্যজন করছে। ললাটে চন্দনের উর্দ্ধ পুণ্ড্র তার মধ্যে ফাগুবিন্দু শোভা পাচ্ছে। এসব দেখে গদাধর পন্ডিতের সংশয় হল। তিনি মনে মনে বললেন—
 
“ভাল ত’ বৈষ্ণব, সব বিষয়ীর বেশ।
দিব্যভোগ, দিব্যবাস, দিব্যগন্ধ কেশ।।
শুনিয়া ত’ ভাল ভক্তি আছিল ইহানে।
আছিল যে ভক্তি, সেহ গেল দরশনে।।
 
(চৈঃ ভাঃ ৭।৬৯-৭০)
 
গদাধর পন্ডিত শিশুকাল থেকেই বৈরাগ্যশীল। শ্রীমুকুন্দ বুঝতে পারলেন গদাধরের মনে কোন সংশয় হয়েছে। তখন মুকুন্দ ভাগবতের এক শ্লোক সুস্বরে গাইতে লাগলেন যাতে বিদ্যানিধির স্বরূপ প্রকাশ পায়।
 
অহোরকী যং স্তনকালকূটং
জিঘাংসয়াপায়য়দপ্যসাধ্বী।
লেভে গতিং ধাক্র্যচিতাং ততোন্যাং
কং বা দয়ালুং শরণং ব্রজেম।।
 
—(ভাঃ৩।২।২৩)
 
পূতনা লোকবালঘ্নী রাক্ষসী রুধিরাশনা।
জিঘাংসয়াপি হরয়ে স্তনং দত্ত্বাপ সদ্‌গতিম্।।
 
—(ভাঃ ১০৷৬৷৩৫)
 
ভক্তিযোগের এই বর্ণন শ্রবণ করে বিদ্যানিধি মহাশয় প্রেমে পাগলপ্রায় হয়ে ক্রন্দন করতে লাগলেন।
 
নয়নে অপূর্ব বহে শ্রীআনন্দধার।
যেন গঙ্গাদেবীর হইল অবতার।।
অশ্রু, কম্প, স্বেদ, মূৰ্চ্ছা, পুলক, হুঙ্কার।
এককালে হৈল সবার অবতার।।
‘বোল, বোল’ বলি’ মহা লাগিল গৰ্জ্জিতে।
স্থির হইতে না পারিলা পড়িলা ভূমিতে।।
—শ্রীচৈঃ ভাঃ ৭/৭৯-৮১)
 
ভূতলে প’ড়ে বিদ্যানিধি মহাশয় উচ্চৈঃস্বরে ক্রন্দন করতে করতে বললেন— মোর প্রাণের ঠাকুর কোথায় গেল? কোথায় কৃষ্ণ? হায় ! হায় ! আমি বঞ্চিত হ’লাম। তাঁর নয়নের জলে ধরণী সিক্ত হতে লাগল। কি মহাকম্প এক এক বার হচ্ছিল। দশজন সেবকও ধরে রাখতে পারছিলেন না। বিদ্যানিধির অত্যদ্ভুত কৃষ্ণ-ভক্তি প্রেম-বিকার সকল দর্শন করে শ্রীগদাধর পন্ডিত বিস্ময়ান্বিত হলেন। তিনি বললেন—
 
“হেন মহাশয়ে আমি অবজ্ঞা করিলু।
কোন্ বা অশুভক্ষণে দেখিতে আইলু।।”
 
গদাধর পন্ডিত মুকুন্দকে বলতে লাগলেন—
 
“মুকুন্দ, আমার তুমি কৈলে বন্ধুকাৰ্য্য।
দেখাইলে ভক্ত বিদ্যানিধি ভট্টাচাৰ্য্য।।
এমত বৈষ্ণব কিবা আছে ত্রিভুবনে।
ত্রিলোক পবিত্র হয় ভক্তি-দরশনে।।”
 
(শ্রীচৈঃ ভাঃ মধ্য ৭৯৭-৯৮)
 
গদাধর পন্ডিত বললেন, — মুকুন্দ ! আমি যখন এঁর কাছে অপরাধ করেছি তখন এঁর থেকে মন্ত্র দীক্ষা নেব। মুকুন্দ বললেন— বেশ ত, ভাল কথা। অতঃপর মুকুন্দ বিদ্যানিধির কাছে গদাধর পন্ডিত সম্বন্ধে সমস্ত কথা বললেন। গদাধরের কথা শুনে বিদ্যানিধি পরম সুখী হলেন। তারপর শুক্ল পক্ষের দ্বাদশীর দিন বিদ্যানিধি গদাধর পন্ডিতকে মন্ত্রণীক্ষা দিলেন।
 
একদিন শ্রীপুন্ডরীক বিদ্যানিধি মহাশয় রাত্রে অলক্ষিতে শ্রীগৌরসুন্দরের কাছে এলেন এবং আনন্দে প্রভুর চরণ তলে মুচ্ছিত হয়ে পড়লেন। অবশেষে ক্রন্দন করে বলতে লাগলেন- হে কৃষ্ণ! হে বাপ ! আমি অপরাধী। আমায় আর কত দুঃখ দিবে? তুমি সমস্ত জগতকে উদ্ধার করলে, কেবল আমায় বাদ দিলে। গৌরসুন্দর তৎক্ষণাৎ বিদ্যানিধিকে কোলে তুলে নিলেন। এবার ভক্তগণ বিদ্যানিধিকে চিনতে পারলেন। গৌরসুন্দর বিদ্যানিধিকে বলতে লাগলেন—
 
“আজি কৃষ্ণ বাঞ্ছা-সিদ্ধি করিলা আমার।
আজ পাইলাং সর্ব-মনোরথ-পার।।
 
নিদ্ৰা হৈতে আজি উঠিলাম শুভক্ষণে।
দেখিলাম প্রেমনিধি সাক্ষাৎ নয়নে।।”
— (শ্রীচৈঃ ভাঃ মযঃ৭ (১৩৮, ১৪৩)
 
ভক্তগণ আনন্দে ‘হরি’ ‘হরি’ ধ্বনি করতে লাগলেন। অতঃপর বিদ্যানিধি মহাশয় অদ্বৈতাদি ভক্তগণের চরণ বন্দনা করলেন। বিদ্যানিধির সঙ্গে সমস্ত ভক্তের মিলন হল।
 
মহাপাপী জগাই ও মাধাইকে উদ্ধার করে মহাপ্রভু যখন ভক্ত সঙ্গে গঙ্গাতে জলকেলি করছিলেন তখন তথায় বিদ্যানিধিও ছিলেন। প্রভুর নদীয়া সংকীর্ত্তন বিলাসের সময় বিদ্যানিধি প্রধান সহচর ছিলেন। মহাপ্রভু সন্ন্যাস গ্রহণের পর যখন পুরীধামে অবস্থান করতেন, প্রতি বৎসর গৌড়ীয় ভক্তগণের সঙ্গে পুন্ডরীক বিদ্যানিধি মহাশয়ও পুরীধামে যেতেন। পুরীধামে মহাপ্রভুর চন্দন যাত্রার সময় নরেন্দ্র সরোবরে ভক্তসঙ্গে জলকেলি কালে বিদ্যানিধি মহাশয় স্বরূপ-দামোদরের সঙ্গে জলকেলি করতেন।
 
“দুই সখা—বিদ্যানিধি, স্বরূপদামোদর।
হাসিয়া আনন্দে জল দেন পরস্পর।।”
 
—(শ্ৰীচৈঃ ভাঃ অন্তঃ ৮।১২৪)
 
একদিন পুরীধামে শ্রীগদাধর পন্ডিত মহাপ্রভুকে বললেন, আমার ইষ্টমন্ত্র সুষ্ঠুভাবে উচ্চারিত হচ্ছে না। মনে হয় মন্ত্রটি কারও কাছে প্রকাশ করেছি। মহাপ্রভু বললেন – তোমার গুরু বিদ্যানিধি তিনি অল্পকালের মধ্যে এখানে আসবেন। এ সম্বন্ধে তখন তুমি তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে পারবে। ঠিক এমন সময় বিদ্যানিধি মহাশয় পুরী ধামে এসে হাজির। তাঁকে পেয়ে ভক্তগণের আনন্দের সীমা রইল না। শ্রীগদাধর পন্ডিতের ইচ্ছা পূর্ণ হল। বিদ্যানিধি মহাশয়ের থাকবার স্থান হল সমুদ্রতীরে যমেশ্বর। তিনি স্বরূপ-দামোদর প্রভুর বড় প্রিয় মিত্র ছিলেন। দুইজনে সর্বদা ইষ্টগোষ্ঠী করতেন এবং জগন্নাথ দর্শন করতেন।
 
এমন সময় শ্রীক্ষেত্রে ওড়ন ষষ্ঠী পর্ব্ব-যাত্রা আরম্ভ হল। জগন্নাথ নববস্ত্রাদি ধারণ করছিলেন। ভগবানের নববস্ত্র হল—মান্ডুয়া বস্তু। মান্ডুয়া বস্ত্র অশুচি হলেও ভগবানের ইচ্ছানুযায়ী তাঁর সেবকগণ তাঁকে এ বস্ত্র পরিয়ে থাকেন। এইদিন নব মান্ডুয়া বস্ত্র ধারণ লীলা উৎসবটি খুব জাঁকজমকের সঙ্গে হচ্ছিল। শ্রীগৌরসুন্দর ভক্তগণসহ বস্ত্রধারণ লীলা দর্শন করছিলেন, জগন্নাথদেব শুক্ল-পীত-নীল রঙের বিবিধ পট্টবস্ত্র ধারণ করে পুষ্প মাল্যাদি দ্বারা সুসজ্জিত হচ্ছিলেন। কত রকমের বাজনা যাত্রাকালে বাদিত হচ্ছিল। কিছু রাত পর্যন্ত মহাপ্রভু এ যাত্রা কৌতুক আনন্দ-চিত্তে দর্শন করলেন। তারপর ভক্তসঙ্গে নিজ স্থানে বিজয় করলেন। এমন সময় দুই বন্ধু স্বরূপ দামোদর প্রভু ও বিদ্যানিধি মহাশয় বিবিধ নর্মালাপ করতে করতে মান্ডুয়া বস্ত্রের কথা তুললেন। মান্ডুয়া বস্তু ঈশ্বর পরেন, এতে সন্দেহ যুক্ত হয়ে বিদ্যানিধি মহাশয় স্বরূপদামোদর প্রভুকে বলতে লাগলেন—এদেশে শ্রুতি ও স্মৃতির প্রভূত বিচার আছে। তথাপি ঈশ্বর অপবিত্র মাণ্ডুয়া বস্ত্র ধারণ করেন কেন?
 
স্বরূপদামোদর প্রভু বললেন—ইহাই বোধ হয় এ দেশের আচার। দেশাচার যদি হয়, ইথে দোষ কি? ঈশ্বরের ইচ্ছা না থাকলে রাজা নিষেধ করতেন। বিদ্যানিধি বললেন—ঈশ্বর স্বতন্ত্র। যা ইচ্ছা তিনি করতে পারেন। কিন্তু সেবক পান্ডাগণ সে অপবিত্র মান্ডুয়া বস্ত্র ধারণ করে কেন? মান্ডুয়া বস্ত্র এত অপবিত্র যে স্পর্শ করলেও হাত ধুতে হয়। রাজপাত্রগণ অবুধ, এর বিচার করেন না। রাজাও দেখি এই দিন মান্ডুয়া বস্ত্ৰ শিরে ধারণ করেন। স্বরূপদামোদর প্রভু বললেন—ভাই! বোধ হয় ওড়নষষ্ঠীর দিন এ বস্ত্র সম্বন্ধে কোন দোষ নাই। কারণ সাক্ষাৎ পরব্রহ্ম জগন্নাথরূপে অবতীর্ণ। তজ্জন্য এখানে বিধি নিষেধের কোন বিচার নাই। বিদ্যানিধি মহাশয় বললেন— জগন্নাথ ঈশ্বর–সব কিছু ধারণ করতে পারেন। তাই বলে কি এগুলাও ব্ৰহ্ম হ’ল? এরাও বিধি নিষেধের তাতীত হল? এই সব কথা বলে হাস্য করতে করতে দুই মিত্র নিজ নিজ বাসস্থানে এলেন এবং শয়ন করলেন। অনন্তর বিদ্যানিধি মহাশয় স্বপ্ন দেখলেন যে শ্রীজগন্নাথ ও বলরাম দুইজনে ক্রোধে অধীর হয়ে বিদ্যানিধির দুই গালে দুই চড় লাগিয়ে বলতে লাগলেন–
 
মোর জাতি, মোর সেবকের জাতি নাঞি।
সকল জানিলা তুমি রহি’ এই ঠাঞি।।
তবে কেনে রহিয়াছ জাতিনাশা-স্থানে।
জাতি রাখি’ চল তুমি আপন-ভবনে।।
আমি যে করিয়া আছি যাত্রার নিৰ্ব্বন্ধ।
তাহাতেও ভাব অনাচারের সম্বন্ধ।।
 
–(শ্রীচৈ: ভা: অন্ত্যঃ ১০।১৩২-১৩৪)
 
শ্রীপুণ্ডরীক বিদ্যানিধি ক্রন্দন করতে করতে শ্রীজগন্নাথের শ্রীচরণে মাথা রেখে বলতে লাগলেন- হে নাথ ! যেমন অপরাধ করেছিলাম, তেমনি শাস্তি পেলাম। আজ আমার পরম শুভদিন। তোমার শ্রীহস্ত আমার কপোলে লাগল। জানি না কোন্ জন্মে কি সুকৃতি করেছিলাম। তাই তোমার হস্ত স্পর্শ অনুভব করলাম। ভগবান শ্রীবিদ্যানিধির প্রতি স্বপ্নে এইরূপ কৃপা করে অন্তর্ধান করলেন। বিদ্যানিধি প্রভাতে গাত্রোখান করে দেখলেন শ্রীজগন্নাথ ও বলরামের চপেটাঘাতে তাঁর দুই গাল ফুলে গেছে। স্বপ্ন-বিবরণ স্মরণ করে তিনি লজ্জিত হলেন। প্রতিদিন স্বরূপ-দামোদর প্রভু প্রাতে তাঁর নিকট আগমন করতেন এবং উভয়ে জগন্নাথ মন্দিরে ঠাকুর দর্শন করতে যেতেন। অন্যান্য দিনের মত এদিনও স্বরূপ দামোদর প্রভু বিদ্যানিধির বাসস্থানে এলেন। দেখলেন বিদ্যানিধি তখনও শায়িত আছেন। সেদিন এতক্ষণ পর্যন্ত শয্যায় থাকবার কারণ জানতে চাইলে বিদ্যানিধি মহাশয় স্বরূপ দামোদর প্রভুকে নিকটে ডেকে রাত্রের অলৌকিক স্বপ্ন বিবরণ দিলেন। বিদ্যানিধির মুখে সবকিছু শ্রবণ করে এবং তাঁর দুই গাল ফোলা দেখে স্বরূপদামোদর প্রভু আনন্দ সাগরে ভাসতে লাগলেন। তিনি বললেন—স্বপ্নে এসে ভগবান কাহাকেও শাস্তি প্রদান করেন এইকথা কখনও শুনি নাই। কিন্তু আজ তা প্রত্যক্ষ করলাম। আপনার সমান ভাগ্যবান্ ত্রিলোকে কে আছে। সাক্ষাৎ ভগবানের করস্পর্শ লাভ করেছেন। স্বরূপদামোদর আনন্দভরে শ্রীবিদ্যানিধি প্রভুর প্রশংসা করলেন। সখার সম্পদ দেখে যেমন সখার আনন্দ হয় সেরূপ পুন্ডরীক বিদ্যানিধির সৌভাগ্য দেখে দামোদর প্রভু নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতে লাগলেন। ভগবান্ শ্রীগৌরসুন্দরের অতি প্রিয় পাত্র ছিলেন বিদ্যানিধি মহাশয়। গৌরসুন্দর তাঁকে বাপ ডাকতেন। বিদ্যানিধি প্রভু শ্রীগৌরসুন্দরের লীলা-সহচর ছিলেন। অতঃপর শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুরের উক্তি উল্লেখ করে এবং শ্রীবিদ্যানিধি প্রভুর চরণ বন্দনা করে প্রবন্ধ শেষ করছি।
 
পুন্ডরীক বিদ্যানিধি-চরিত্র শুনিলে।
অবশ্য তাঁহারে কৃষ্ণপাদপদ্ম মিলে।।
 
(শ্ৰীচৈঃ ভাঃ অন্ত্যঃ ১০।১৮১)
 
 
  • February 20-21, 2022 Puri, Odisha
  • 3rd of July in 2022 Balasore, Odisha
  • August 24-26, 2022 Kurukshetra, Haryana
  • October 7, 2022 Prayagraj, Uttar Pradesh
  • November 30 -1, 2022 Agartala, Tripura
  • December 3-4, 2022 Lalabazar, Assam
  • December 7, 2022 Guwahati, Assam
  • February 17-18, 2023 Baruipur, West Bengal
  • May 27-28, 2023 Patna, Bihar
  • June 26, 2023 Bhubaneswar, Odisha
  • November 26, 2023 Gaya, Bihar
  • February 8, 2024 Delhi
  • February 13-15, 2024 Balighai, Medinipur
  • March 19, 2024 Nabadwip, West Bengal
  • May 27 2024 Florida, USA
  • June 23-24, 2024 Baripada, Odisha
  • June 26-27, 2024 Paradeep, Odisha
  • June 29-30, 2024 Cuttack, Odisha
  • July 14, 2024 Chennai, Tamilnadu
  • August 31 2024 London
  • September 07 2024 London
  • September 08 2024 Berlin (Germany)
  • September 13 2024 Canada
  • September 14-15 2024 Rochester (USA)
  • September 21 2024 New Jersey (USA)
  • Upcoming Events