শ্রীল রঘুনন্দন দাস ঠাকুরের তিরোভাব তিথি

#Disappearance #Raghunandan #raghunandanthakur #GaudiyaMission #gaudiyavaishnavism #prabhupad150 #harekrishna

শ্রীমুকুন্দ দাস, শ্রীমাধব দাস ও শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুর তিন ভাই। এঁরা শ্রীখণ্ডে বাস করতেন। শ্রীমুকুন্দ দাস ঠাকুরের পুত্র শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর। শ্রীমুকুন্দ দাস ঠাকুর রাজবৈদ্য ছিলেন। তিনি নিরন্তর কৃষ্ণাবেশে কাজ করতেন।

বাহ্যে রাজবৈদ্য ইঁহো করে রাজ-সেবা।

অন্তরে কৃষ্ণ-প্রেম ইঁহার জানিবেক কেবা।।

–( চৈঃ চঃ মধ্যঃ ১৫।১২০ )

একদিন শ্রীমুকুন্দ দাস বাদশাকে চিকিৎসা করবার জন্য রাজভবনে গমন করলেন। বাদশা উচ্চ আসনে বসে আছেন। শ্রীমুকুন্দ দাস পাশে বসে চিকিৎসার কথা জিজ্ঞাসা করছেন। সে সময় এক ভৃত্য ময়ুরের পুচ্ছের বৃহৎ পাখা নিয়ে বাদশাকে হাওয়া করতে লাগল। ময়ুরের পুচ্ছ দেখে শ্রীমুকুন্দ দাসের কৃষ্ণ-স্মৃতির উদ্দীপনা হল । অমনি বিবশ হয়ে ভূমিতে পড়লেন। বাদশা শ্রীমুকুন্দ দাসকে অচৈতন্য দেখে মনে করলেন—তিনি প্রাণত্যাগ করলেন না কি? তাড়াতাড়ি নীচে নেমে তাকে ধরে উঠালেন। জিজ্ঞাসা করলেন—কোন ব্যথা পেয়েছেন কি না? শ্রীমুকুন্দ দাস বললেন—কোন ব্যথা পাই নি। বাদশা পড়বার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। মৃগী ব্যাধি আছে বলে বাদশার কাছে গোপন করলেন। মহাসিদ্ধ পুরুষ বলে বাদশা অনুমানে বুঝতে পারলেন ৷ বহু সম্মান সহ তাকে গৃহে পাঠিয়ে দিলেন।

শ্রীমুকুন্দ দাস, শ্রীমাধব দাস ও শ্রীনরহরি সরকার–এঁরা প্রতি বছর নীলাচলে এসে মহাপ্রভুর দর্শন ও রথযাত্রায় নৃত্যকীৰ্ত্তনাদি করতেন। শ্রীমুকুন্দ দাসকে প্রভু এক দিবস স্নেহভরে জিজ্ঞাসা করলেন, মুকুন্দ! তুমি ও রঘুনন্দন দুজনের মধ্যে কে পিতা? কে পুত্র বল? শ্রীমুকুন্দ বললেন– রঘুনন্দনই আমার পিতা। যাঁর থেকে কৃষ্ণ-ভক্তি পাওয়া যায় তিনিই প্রকৃত পক্ষে পিতা। প্রভু বললেন— তোমার বিচারই ঠিক।

“যাঁহা হৈতে কৃষ্ণ ভক্তি সেই গুরু হয়।।”

–(চৈঃ চঃ মধ্যঃ ১৫।১১৭)

প্রভু শ্রীরঘুনন্দনকে বিগ্রহ সেবা করতে আদেশ দিলেন।

“রঘুনন্দনের কার্য্য—কৃষ্ণের সেবন।

কৃষ্ণ-সেবা বিনা ইঁহার অন্যে নাহি মন।।”

– (চৈঃ চঃ মধ্য ১৫।১৩১)

শিশুকালে শ্রীরঘুনন্দন শ্রীমূর্ত্তিকে লাডু খাইয়ে ছিলেন। পদকর্ত্তা শ্রীউদ্ধব দাস অতি সুন্দরভাবে এ বিষয় বর্ণন করেছেন।

শ্রীনরোত্তম ও শ্রীনিবাস খেতরি গ্রামে যে মহোৎসব করেছিলেন সে উৎসবে শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর এসেছিলেন এবং কীর্ত্তন করেছিলেন।

শ্রীঅভিরাম গোপাল ঠাকুর ও শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর বড় ডাঙ্গিতে কোন ভক্তগৃহে নৃত্য করেছিলেন। শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুরের পায়ের নূপুর নৃত্যকালে খুলে আকাই হাটে এক পুষ্করিণীতে গিয়ে পড়ে। ইহার থেকে পুষ্করিণীর নাম নূপুর কুণ্ড হয়। বর্ত্তমানে আকাই হাটের দক্ষিণে বড়ুই গ্রামের মহান্তবাড়ীতে সে নূপুর আছে।

শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর ব্রজলীলায় কন্দর্প মঞ্জরী ছিলেন। দ্বারকা লীলাতে ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের পুত্র কন্দর্প।

শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুরের পুত্র কানাই ঠাকুর। শ্রীখণ্ডে অদ্যাপি তাঁর বংশধরগণ আছেন। শ্রীখণ্ডবাসী পঞ্চানন কবিরাজ এর বংশে জন্মেছিলেন।

শ্রীরঘুনন্দনের জন্ম শকাব্দ ১৪৩২।

Related Article

BLOG

শ্রীল সনাতন গোস্বামীপাদের তিরোভাব তিথি

শ্রীসনাতন গোস্বামীর জন্ম খৃষ্টাব্দ ১৪৮৮, শকাব্দ ১৪১০ (গৌড়ীয় ২১।২-৪)। শ্রীরূপ গোস্বামীর জন্ম খৃষ্টাব্দ ১৪৯৩, শকাব্দ ১৪১৫। এঁরা রাজধানী গৌড়ের নিকটে সাকুর্মা নামক এক ক্ষুদ্র পল্লীতে

Read More »
BLOG

শ্রীহরিশয়নী একাদশীর ব্রতোপবাস ০৬ জুলাই ২০২৫,রবিবার

(একাদশীতে কী কী করা এবং খাওয়া উচিত নয়)এখন দেখে নেওয়া যাক একাদশীতে কোন পাঁচ প্রকার রবিশস্য গ্রহণ নিষিদ্ধ:১। ধান জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন চাল,

Read More »