শ্রীল সারঙ্গমুরারী ঠাকুরের তিরোভাব
শ্রীমদ্ কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামী ঠাকুর লিখেছেন—
রামদাস, কবিচন্দ্র, শ্রীগোপালদাস।
ভাগবতাচার্য্য, ঠাকুর সারঙ্গদাস।।
—(শ্ৰীচৈঃ চঃ আদি ১০।১১৩)
শ্রীসারঙ্গ মুরারি ঠাকুরকে কেহ শ্রীসাঙ্গ ঠাকুর কেহ শ্রীসাঙ্গপাণি ও কেহ সাঙ্গধর বলেন। তিনি নবদ্বীপের অন্তর্গত মোদদ্রুম দ্বীপে (মামগাছিতে) অবস্থান করতেন। তথায় অদ্যাপি তাঁর সেবিত শ্রীশ্রীরাধাগোপীনাথ বিদ্যমান। মন্দির আঙ্গিনায় প্রাচীন একটি বকুল বৃক্ষ আছে। বৃক্ষটি সেই সময়কার বলে অনুমিত হয়।
কথিত আছে শ্রীসারঙ্গ মুরারি ঠাকুর শিষ্য করবেন না বলে সঙ্কল্প করেন। কিন্তু মহাপ্রভু শিষ্য করবার জন্য বার বার তাঁকে প্রেরণা দান করেন। অবশেষে তিনি শিষ্য করতে রাজি হলেন এবং বললেন— তাঁর সঙ্গে পরদিন প্রাতে সর্ব্বপ্রথম যার দেখা হবে তাকেই শিষ্য করে মন্ত্র দিবেন।
পরদিন প্রাতে স্নান করতে গঙ্গায় চললেন। ঘটনাক্রমে গঙ্গাঘাটে একটি মৃতদেহে তাঁর পদস্পর্শ হল। তিনি দেহটাকে তুলে বললেন—তুমি কে? গাত্রোখান কর। আশ্চর্য্য যে মৃত দেহটি তাঁর আদেশে গাত্রোত্থান করল এবং তাঁকে নমস্কার করে সম্মুখে বসল। বললে— আমার নাম মুরারি ! আমি আপনার দাস। আমাকে কৃপা করুন। শ্রীসারঙ্গ ঠাকুর তাঁকে মন্ত্র দীক্ষা দিয়ে শিষ্য করলেন। তখন শ্রীসারঙ্গ ঠাকুরের নাম হল সারঙ্গ মুরারি। মুরারি একান্তভাবে শ্রীগুরুসেবা করতে লাগলেন। কিছুদিন পরে শ্রীসারঙ্গ ঠাকুর তাঁকে শ্রীরাধা গোপীনাথের সেবাধিকারী করলেন। তিনি শ্রীমুরারি ঠাকুর নামে খ্যাত হলেন।
শ্রীকবিকর্ণপুর গোস্বামী লিখেছেন—“যিনি পূৰ্ব্বে ব্রজলীলায় শ্রীনান্দীমুখী ছিলেন তিনি অধুনা শ্রীসারঙ্গ ঠাকুর নামে খ্যাত।”
তাঁর আবির্ভাব আষাঢ় কৃষ্ণ-চতুৰ্দ্দশী তিথিতে ও তিরোভাব অগ্রহায়ণ কৃষ্ণ-ত্রয়োদশী তিথিতে।